ছাতক সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় কক্ষে হাঁটু পানি, ৪ অফিসে দুর্ভোগ চরমে

34
ছাতক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে হাঁটু পানি।

আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
সুনামগঞ্জের ছাতক সাব- রেজিস্টার অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের আঙ্গিনা, বারান্দা ও বিভিন্ন অফিস কক্ষে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে টানা কয়েক ঘন্টা বৃষ্টির ফলে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সেবা নিতে আসা মানুষ ও সেবা দাতা কর্মকর্তারাও পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
সরজমিন ছাতক সাব- রেজিস্ট্রার অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় ও বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়। সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ব্যবহারে অনুপযোগি জরাজির্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে টানা কয়েক ঘন্টার বৃষ্টির পানিতে কার্যালয়ের কক্ষে প্রায় ১ ফুট পানি জমেছে। কার্যালয়ের বারান্দা ও আঙিনা ও বারান্দায় জমে আছে হাঁটু পানি। এ পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কার্যালয় ঘিরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের ছাদ ছুঁয়ে গড়াচ্ছে পানি। ভবনের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে ঘিরে রেখেছে বনের লতা-পাতা।
ছাদ ছুঁয়ে পানি পড়ে দলিলাদি ফাইলপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ভবনে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র, উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়। সব কার্যালয়গুলো পড়েছে জলাবদ্ধতার কবলে। পাশের ভবনে রয়েছে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়। এ কার্যালয়ে ইটের ওপর ভর করে যাতায়াত করতে হয়। জলাবদ্ধতা, ময়লা যুক্ত পানি, আর ময়লা আবর্জনা দুর্গন্ধে নাকাল সাব-রেজিস্ট্রার ভবন ও আশপাশ এলাকা। এ কারণে সেবা নিতে আসা মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা সৈদাবাজের ফরহাদ মিয়া, মুক্তিরগাঁও গ্রামের হুশিয়ার আলী, বেতুরা গ্রামের শফিক মিয়াসহ অনেকেই বলেছেন, সামান্য বৃষ্টি পাতে এখানে পানি জমে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মঙ্গলবার ভোর থেকে টানা বর্ষনে ভবনের বারান্দায় প্রায় ১ফুট ও মাঠে হাঁটুর উপর পরিমানে পানি জমেছিল। প্রতিটি রুমে রুমে জমে ছিল বৃষ্টির পানি। জলাবদ্ধতা, ময়লা-আবর্জনা যুক্ত পানির সীমাহীন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
ভূইগাঁও গ্রামের আব্দুল আউয়াল, বেরাজপুর গ্রামের চান মিয়া, কালারুকা গ্রামের মছব্বির আলীসহ সেবা নিতে আসা একাধিক লোকজনরা জানান, সকালে প্রচুর পরিমাণের বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বৃষ্টির পানি ভবনটির প্রতিটি রুমে ও বারান্দায় ছিল। এ কারণে দুপুর পর্যন্ত কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়। বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দলিল রেজিস্ট্রার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল বলে তারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, জরাজীর্ণ ভবনে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য এখানের সাব-রেজিস্ট্রার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধিদল এখানে সরজমিন পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধিদল স্থানীয় রহমতভাগে একটি দ্বিতল ভবনে সাব-রেজিস্ট্রারের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ভবন মালিকের সাথে ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত করেন।
ছাতক সাব-রেজিস্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সকালে প্রতিটি কক্ষে পানি জমেছিল। তার রুমেও ছিল প্রায় হাঁটু পরিমাণ পানি। যে কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। পানি কিছুটা নামার পর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তিনি কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রায় ৭১টি দলিল রেজিস্ট্রার করেছেন। জলাবদ্ধতায় কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কষ্ট করে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যবহারে অনুপযোগি জরাজির্ণ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়টি দ্রুত স্থানান্তর করা হবে। তবে গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টি নির্দিষ্ট হলে ভবনের মালিকের সাথে ভাড়ার চুক্তিনামা সম্পাদন সাপেক্ষে স্থানান্তরের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।