ধর্ষণ মামলার আসামীকে হয়রানির অভিযোগে মৌলভীবাজার ওসিসহ ৬জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

15

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
ধর্ষণ মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগ তুলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ ও বর্তমানে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুছ ছালেকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিউ সমনবাগ চা বাগান ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান খান।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিছবাহুর রহমানের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং সিআর ৫৫৬/২২।
গতকাল বুধবার মৌলভীবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অধিকতর শুনানির দিন ছিলো। আদালত আগামী ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন শুনানী শেষে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, ধর্ষণ মামলার বাদী তুলনা বেগম, ফাহমিদা বেগম, বানেছা বেগম, সুফিয়া বেগম ও শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির।
মামলার বাদী আতাউর রহমান মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের সাবেক ব্যবস্থাপক।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, তৎকালীন শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (বর্তমানে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ) আব্দুছ ছালেক বাদীসহ ধর্ষণ মামলার অন্যান্য আসামিদের হয়রানি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে শ্রীমঙ্গলের তুলনা বেগমের দায়ের করা মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় আসামি করেন। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগ এনে তুলনা বেগম ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ২৬/৩৬৭)। মামলায় চা বাগান ব্যবস্থাপক আতাউর রহমানসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আতাউর রহমান কারাভোগও করেন। ধর্ষণ মামলায় প্রতিবন্ধী ইকবাল হোসেন রাসেলকে আসামি করা হয়। ওসি ছালেক ও তদন্ত অফিসার হুমায়ুন কবির নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য এক পর্যায়ে ধর্ষণ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চা বাগান আতাউর রহমানসহ ৫ জনের নাম বাদ দেন।
মামলার বাদী আতাউর রহমান বলেন, আমার সম্মান ক্ষত্নু এবং হয়রানি করার জন্য একটি চক্রের পরিকল্পনায় এই মামলা দায়ের করা হয়। মিথ্যা মামলায় কারাভোগের পর ন্যায়বিচারের জন্য সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করি। কিন্তু কোনো সুবিচার পাইনি। যার প্রেক্ষিতে ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। ওসি আব্দুছ ছালেক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির সুপরিকল্পিতভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন,মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মামলার আসামী সুজন মিয়া কোথা হতে ভিকটিম ফাহমিদা আক্তার অপহরণ করে কোন স্থানে ধর্ষণ করেছে তা উদঘাটন না করে দায়সারাভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
কুলাউড়া থানার ওসি (শ্রীমঙ্গল থানার সাবেক ওসি) আব্দুছ ছালেক বলেন, সে গণধর্ষণ মামলার আসামি ছিলো। একটি বাগানে নিয়ে গ্যাং রেপ করেছে। সেই আলোকে আমরা মামলা নিয়েছি, ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে। এখন সে জামিনে এসে নাকি সাজানো মামলা দিয়েছে। আশা করি তদন্তে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, কোর্ট অফিসার ইনচার্জের মাধ্যমে মামলার বিষয়টি অবগত হয়েছি। তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।