ইউনিয়ন পরিষদের জমি বিক্রি

9

সরকারি জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণের খবর বিভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়। এই জমি দখলদারির ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দেশের পুরনো রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বাংলাদেশ রেলওয়ে। অনেক রেলপথ ও স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে।
সারা দেশে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তির পরিমাণ একেবারে কম নয়। একটি অসাধু চক্র রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি দখল করে আছে। অনেক জমি চলে গেছে এই চক্রের সদস্যদের ব্যক্তিমালিকানায়। এসব জমি বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে; কিন্তু বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের জমি কী করে একজন চেয়ারম্যান বিক্রি করেন? কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে দিয়েছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৫ জুলাই হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের অর্থে কেনা ৫১ শতাংশ জমির ওপর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর। নিয়ম অনুযায়ী পরিষদের নামে পক্ষে সচিব মালিক হবেন। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান তাঁর নামে জায়গাটি কেনেন। তখনো তিনি এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
নিজের নামে নামজারি করার পর ২০১০ সালে চেয়ারম্যান কয়েকজনের কাছে ওই জমির ১৮ শতাংশ বিক্রি করেন। পরিষদের সাধারণ সভায় অনুমতি নিয়ে চেয়ারম্যান নামমাত্র মূল্য দেখিয়ে বিক্রি করেন। অথচ ওই জমির বাজারমূল্য অন্তত ৫০ লাখ টাকা। জমিটি ২০০৭ সালে যখন ইউনিয়ন পরিষদের অর্থে কেনা হয়, তখন ৫১ শতাংশের দলিলমূল্য দেখানো হয় ছয় লাখ ২০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ২০১০ সালে তিন বছর পর বিক্রি করতে গিয়ে অর্ধেক মূল্য দেখানো হয়। বাকি টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে ২০১৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করার পর বিষয়টি তদন্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কিন্তু গত দেড় বছরে সেই তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি বা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো মূল্যায়ন হয়নি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া স্থানীয় একটি মাদরাসার প্রায় ২৪ বিঘা জমি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে জমিজমাসংক্রান্ত অভিযোগ অনেক বেশি। রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কিছু জমি বিক্রির অভিযোগটি খতিয়ে দেখা দরকার। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হোক।