ফাঁড়ি বাগানসহ ২৩২টি চা বাগানে ৩য় দিনের মতো চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন ॥ দাবি না মানলে মহাসড়ক অবরোধ

22
৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দেশের ফাঁড়ি বাগানসহ ২৩২টি চা বাগানে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন।

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
দেশের ২৩২টি ফাঁড়ি বাগানের চা শ্রমিকেরা দৈনিক মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে ঘোষিত তিনদিন ব্যাপী শেষদিনেও দুই ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন চা শ্রমিকরা। এ সময় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা। চা শ্রমিকের দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ও দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধের আল্টিমেটাম দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা।
এদিকে বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তিনি বৈঠকে বসেছেন। তবে আলোচনা চলছে, কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি তিনি।
ভাড়াউড়া চা বাগানে কর্মসূচিতে চা শ্রমিক নেতা দুলাল হাজরা বলেন, দাবি না মানলে শুক্রবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও যদি দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে কঠোর ও লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান। পরে দুইঘন্টা কর্মবিরতি পালন শেষে কাজে যোগ দেন শ্রেিকরা।
কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে চা শ্রমিক নেতারা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের বর্তমান দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানান। তাঁদের দৈনিক মজুরি অবিলম্বে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে।
তারা বলেন, বর্তমান শ্রমবাজারে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে একজন শ্রমিকের সংসার চালানো অমানবিক বিষয়। চা শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে। শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত চা শ্রমিকেরা। ভূমির অধিকার থেকেও চা শ্রমিকদের বঞ্চিত রাখা হয়েছে। যে বাগানে শ্রমিকেরা বসবাস করেন, সেই ভূমির কোনো অধিকার তাদের নেই।
গত (৯ আগষ্ট) মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে ফাঁড়িবাগানসহ ২৩২টি চা বাগানে তৃতীয় দিনের মতো চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন করেছেন। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বিভিন্ন ভ্যালীর যৌথ সিদ্ধান্তে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনায় বসেছি। তাদের দাবি দাওয়া ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা চলছে,চেষ্টা করবো দ্রুত বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার। তিনি আরও বলেন,সিদ্ধান্তে পৌঁছলে বিষয়টি আপডেট জানাবো।
জানতে চাইলে বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান মো.শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মজুরি ১৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অধিকাংশই বাগানগুলো লোকসানে আছে। চায়ের বাজার তেমন ভালো না। আবার জ্বালানি তেলের দামও বেড়ে গেছে। চা শ্রমিকদের রেশনের আটা দেওয়া হয়। প্রতি কেজি গমের দাম ১৪ টাকা থেকে বেড়ে ২৮ টাকা হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে ভাবতে হবে।’