স্ত্রীকে ভারতে পাচারের দায়ে স্বামী সোহেল মিয়া মৌ’বাজার থেকে গ্রেফতার

33

স্টাফ রিপোর্টার :
ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের পর বউকে কৌশলেই ভারতীয় পাচারকারীর হাতে তুলে দেওয়া ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত মঙ্গলবার সকালে মূলহোতা ও মামলার প্রধান আসামিকে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা। গ্রেফতাররকৃত সোহেল মিয়া (২৫) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া মিয়ার পুত্র। র‌্যাব-৯ এর গণমাধ্যম বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি নিজের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করে। ঘটনায় অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত আসামিকে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে পাটগ্রাম থানা পুলিশ গত শনিবার অভিযান চালিয়ে পাচারদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল হক, চম্পা বেগম নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ৩ বছর পূর্বে পরিচয়ের পর প্রেম হয় তাদের। তারপর প্রেমিক নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার পুত্র সোহেল ও প্রেমিকা নুর নাহার অবৈধভাবে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে প্রেমিকা নুর নাহারকে দিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করার চেষ্টা করেন সোহেল। কিন্তু নুর নাহার বিষয়টি বুঝতে পেয়ে সোহেলের সঙ্গে ঝগড়া করেন। পরে ৮/৯ মাস পর ভারতের কলকাতা থেকে কৌশলে একই পথে দেশে পালিয়ে আসেন প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম)। কিছু দিন পরও দেশে আসেন সোহেল। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল ও নুর নাহার বিয়ে করেন। কিছু দিন পর নুর নাহার গর্ভবতী হন। কিন্তু সোহেল আবার নুর নাহারকে পাচারের জন্য পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাঠিয়ে দেন স্বামী সোহেল। ১৩ মে ভোরে পাচারকারীরা তাকে ওই উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়।
এ সময় নুর নাহারকে ধর্ষণ করেন ওই পাচার দলের সদস্য মোকছেদুল। নুর নাহার ভারতে প্রবেশের পর বুঝতে পারেন তার স্বামী তাকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ১৫ মে রাতে আবারও নুর নাহার কৌশলে দেশে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর এবার আশরাফুল ইসলাম নামে অপর এক পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন। টাকার জন্য নুর নাহার ১৫ মে থেকে আটকে রাখেন পাচার দলের সদস্যরা। সেখান থেকেও কৌশলে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করেন নুর নাহার।