ট্রেনের টিকিট ফেরত দিতে সিলেট রেল স্টেশনে কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়, দুর্ভোগ চরমে

4
ট্রেনের ধর্মঘটে বিপাকে পড়েন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে আসা যাত্রীরা। ছবি- মামুন হোসেন

‘স্টাফ রিপোর্টার :
সেহরি খেয়ে রেল স্টেশনে এসেছিলাম ঢাকা যাওয়ার জন্য, এখনও বসে আছি। কখন ট্রেন চালু হবে কেউ বলতে পারছে না। এমনটি বলছিলেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। ঢাকা যাওয়ার জন্য ভোরেই স্টেশনে এসেছিলেন তিনি। সকাল ৬ টা ১৫ মিনিটে কালনী ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিলো তার। টিকিট কিনেছিলেন আরও দুদিন আগে। তবে বেলা ১২ টা পর্যন্ত স্টেশনে বসে থাকলেও ট্রেন ছাড়েনি।
সাইফুল বলেন, লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট কিনতে হয়েছে। এখন আবার টিকিট ফেরত দেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বেলা ১২ টায় সিলেট রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফরমে দাঁড়িয়ে আছে জয়ন্তিকা ট্রেন। সকালে এটি সিলেট স্টেশন ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও দুপুর পর্যন্ত ছেড়ে যায়নি। অপরদিকে টিকিট কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়। টিকিট কেনার বদলে ফেরত দেয়ায় জন্যই যাত্রীদের ভিড় বেশি।
সিলেট রেল স্টেশন সুত্রে জানা যায়, কালনী ছাড়াও সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে পাহাড়িকা ও ১১ টা ১৫ মিনিটে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ছেড়ে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিলো। তবে রেল কর্মচারিদের ধর্মঘটের কারনে এই ট্রেনগুলো ছেড়ে যায়নি।
রেল স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, যাত্রা বাতিল হওয়া ট্রেনগুলোর যাত্রীদের টিকিট ফেরত নিয়ে টাকা ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, গতকাল বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ট্রেনের চালকসহ রেলওয়ের কর্মচারিরা স্টেশনে আসেননি। পেনশন থেকে মাইলেজ ভাতা বাতিলের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে ধর্মঘটে নেমেছেন রেলওয়ের কর্মচারিরা। এতে সারাদেশের মতো সিলেটেও বন্ধ রয়েছে সিলেটে ট্রেন চলাচল। এদিকে আচমকা এই ধর্মঘটের কারনে দুর্ভোগে পড়েছেন সিলেটের যাত্রীরা।
রেল স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা শফি ইসলাম বলেন, রমজান মাসে সকাল থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় আছি। এভাবে যাত্রীদের জিম্মি করার কোন অধিকার কর্মচারিদের নেই।
আজাদ আহমদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় যাবো। সন্ধ্যায় ঢাকায় আমার ডাক্তারের এপোয়েনমেন্ট। তিনি বলেন, ঢাকা যেতে পাহাড়িকা ট্রেনের টিকিট কিনেছিলাম। কিন্তু স্টেশনে এসে শুনি ট্রেন বন্ধ। এখন আমাকে বাসের টিকিট কিনে ঢাকা যেতে হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত তিনটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে জানিয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম বেলা সাড়ে ১২টায় বলেন, ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়েছে। তবে কখন থেকে ও কোন সিডিউলে ট্রেন চলাচল শুরু হবে তা এখনও জানতে পারিনি। ঢাকা থেকে এ ব্যাপারে আমাদের জানানো হবে।