দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেটে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সমাবেশ

5
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে রবিবার (২০ মার্চ) বিকেলে ৫টায় নগরীতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি সুরুজ আলীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা শাখার অন্যতম নেতা বদরুল আজাদ, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি মামুন আহমদ খাঁন, স’মিল শ্রমিক সংঘ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো. আনছার আলী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক মন্দাজনিত পরিস্থিতিতে অতি উৎপাদন সংকটে জর্জরিত বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী ও জনগণ বেকারত্বের অভিশাপ, অভাব অনটন, অনাহার-অর্ধাহার, জীবন জীবিকার অনিশ্চয়তায় হাবুডুবু খাচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সারা বছর লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে শ্রমিক কৃষক জনগণের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় তাদের দালাল শাসকশ্রেণি প্রতি বছর দফায় দফায় জ্বালানী তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বৃদ্ধি করাসহ গাড়ী ভাড়া, বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যায় বৃদ্ধির ফলে জাতীয় ও জনজীবনের সংকট আরো তীব্র হচ্ছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির কথা বলে সরকার সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালপুঁজির বেপরোয়া মুনাফাকে অবাধ করে মুনাফার পাহাড় বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। এর ফলে সমাজে ধনী-গরীবের বৈষম্য দ্রুত বৃদ্ধি হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান এশিয়া বিশ্বের প্রবৃদ্ধি অঞ্চল হওয়ায় এতদ্বঞ্চল তথা দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইন্দো-প্যাসিপিক রণনীতি এবং কোয়াড ও অকাস (অটকটঝ) গঠন করে তৎপরতা জোরদার করে। যুক্তরাষ্ট্র এতদ্বঞ্চলের প্রধান আঞ্চলিক শক্তি নয়া-উপনিবেশিক ভারতকে চীনের পাল্টা ভারসাম্য হিসেবে কাজে লাগাতে চায়। আবার চীন রাশিয়া ভারতকে স্বপক্ষে টানতে সচেষ্ট। দক্ষিণ ও দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার স্থল সংযোগ সেতু এবং প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের সংযোগকারী মালাক্কা প্রণালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে এদেশকে নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র। একক পরাশক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ স্বীয় প্রাধান্য ধরে রাখা এবং প্রতিপক্ষ চীন রাশিয়া তাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় প্রতিযোগীতায় লিপ্ত। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার ইন্দো-প্যাসিপিক রণনীতিতে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে কোয়াড প্লাস সামনে আনে। প্রতিপক্ষ চীন এর তীব্র বিরোধিতা করে। বাংলাদেশ চীনের বিআরআই এ সম্পৃক্ত ও চীনের দিকে ঝুঁকে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ কৌশলে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ অবস্থায় ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রতিক্রিয়াশীল সরকার ও বিরোধী দল উভয়েই প্রচুর আশির্বাদ পাওয়ার জন্য লবিস্ট কৌশলে এবং আগামী সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে “নির্বাচন আইন” ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে অগ্রসর হচ্ছে। প্রচলিত স্বৈরতান্ত্রিক এ ব্যবস্থায় নির্বাচনে জনগণের কোনো লাভ নেই।
এর বিরুদ্ধে জনগণকে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল এবং তাদের স্বার্থরক্ষাকারী সরকারের বিরুদ্ধে বিজয় অবধি আন্দোলন সংগ্রাম -বিপ্লব করা ছাড় উপায় নেই। বিজ্ঞপ্তি