বাংলাদেশকে এখন আর কেউ করুণার চোখে দেখে না – প্রধানমন্ত্রী

2
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ পরিকল্পনা কমিশনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে যুক্ত হয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) এর সভায় দুটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-আদর্শ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের মানুষের জীবন উন্নত ও সুন্দর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে একটা লক্ষ্য স্থির করেই পথ চলছি। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীন করেছেন সেটা আমাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। করতেই হবে এটাই আমার প্রতিজ্ঞা। এই একটি জায়গায় আমি বলব আমাকে করতেই হবে।
বুধবার ‘জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) এর সভার প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করা, তাদের জীবনকে উন্নত করা, তাদের জীবন যেন সুন্দর হয়, সম্মানজনক হয়, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলতে পারে এটাই হচ্ছে আমার একমাত্র লক্ষ্য। যেটা জাতির পিতা সব সময় চাইতেন, বলতেন। সে স্বপ্নটা অধরা থাক সেটা আমি চাই না।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকারের ১৩ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে এবং আরও সামনে এগিয়ে গিয়ে একদিন আমরা উন্নত দেশ হব।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ করুণার চোখে দেখে না, সম্মানের চোখে দেখে। অন্তত এই পরিবর্তনটুকু আমরা গত ১৩ বছরে করতে সক্ষম হয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে আগামীতেও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তার সরকার সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। কেননা করোনা মহামারীতে সমগ্র বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল তারমধ্যেও তার সরকার অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে তার সরকার ডিজিটাল করতে পেরেছিল বলেই করোনার মধ্যেও একনেক, এনইসিসহ বিভিন্ন সভা ভার্চুয়ালি আয়োজনের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাটা সরকার অব্যাহত রাখতে পেরেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সময়কে কাজে লাগানোয় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস, এই মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছেন। যিনি আমাদের স্বাধীনতার পাশাপাশি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছেন। এই মাসের ৭ মার্চ জাতির পিতা যে ভাষণ দিয়েছেন তা আজ আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। আর ২৬ মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
’৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনের কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিঝরা এই মার্চের প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন কিন্তু সেই অল্প সময়ের মধ্যেই একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রে পরিণত করে তিনি আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, সেই সময় সংবিধান তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দেয়া এবং পরিকল্পনা কমিশন গঠন করে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ ’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও জাতির পিতার খুনীচক্র ক্ষমতায় এসে দেশকে সামনের দিকে না নিয়ে আরও পিছিয়ে দেয়।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মৃতিচারণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা জাতির পিতা শেখ মুজিবের আদর্শ নিয়েই কিন্তু আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।