আরসা নেতার স্মার্টকার্ড

6

আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহর ভাই ধৃত মোঃ শাহ আলীর কাছে প্রাপ্ত বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র তথা স্মার্টকার্ড পাওয়া নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে দেশে। গত রবিবার শাহ আলীকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করে কক্সবাজারের উখিয়া থানা পুলিশ। দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শাহ আলী চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার দেওয়ানবাজার জয়নব কলোনির স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহারের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাংলাদেশী এনআইডি ২০১৮ সালে। অথচ এই নামে উক্ত এলাকায় কেউ থাকে না। চট্টগ্রামে নকল এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বাংলাদেশী পাসপোর্ট করে দেয়ার কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে সুসংগঠিত একটি চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। সম্প্রতি এই চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। গত বছর এই দুষ্টচক্রের অন্তত ১৫ জনকে আটক করে আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী। জব্দ করা হয় ইসি ও পাসপোর্ট অফিস থেকে চুরি যাওয়া ল্যাপটপ, জাল বা ভুয়া এনআইডি, ভুয়া পাসপোর্ট ইত্যাদি। সংঘবদ্ধ এই চক্রটি মাত্র ৫শ’ থেকে হাজার টাকার বিনিময়ে অবৈধ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরবরাহ করে থাকে এনআইডি। কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে বাংলাদেশী পাসপোর্ট। এর সঙ্গে প্রধানত জড়িত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্মরত ডাটা এ্যান্ট্রি অপারেটররা, যারা প্রধানত আউটসোর্সিংয়ে নিয়োজিত কর্মী।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তিন বছর পরও বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি ঝুলে গেছে বলেই প্রতীয়মান হয়। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ নিয়ে বর্তমানে সাড়াশব্দ নেই বললেই চলে। তাই বলে রোহিঙ্গারা কিন্তু থেমে নেই। ইতোমধ্যে দুই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে পালিয়ে গেছে। যে কারণে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেয়া হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। তবু পারস্পরিক হানাহানি, সংঘাত সংঘর্ষ, খুনাখুনি, অগ্নিকান্ড, ইয়াবা ব্যবসা চলছেই।
পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি পুরনো। অভিযোগ আছে, রোহিঙ্গারা অনেক আগে থেকেই জাল বা ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশী পাসপোর্ট বাগিয়ে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছে এবং সেসব স্থানে নানা অপরাধ-অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। সৌদি আরব এসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চাপও দিয়েছে বাংলাদেশকে।
মনে রাখতে হবে যে, এর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত গভীরভাবে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে অথবা জাল করে রোহিঙ্গারা পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। সেখানেও জড়িয়ে পড়ছে নানা অপকর্মে। এভাবে চলতে থাকলে রোহিঙ্গা বিশেষ করে তরুণদের জঙ্গী ও সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা। সে অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে।