দেশে ৫৬ শতাংশ ইটভাটা বৈধ

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে মাত্র ৫৬ শতাংশ ইটভাটা বৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আর বাকিগুলো অবৈধভাবে পোড়াচ্ছে ইট। এসব ইটভাটা বিগত বছরগুলোর মতো চলতি মৌসুমেও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে। ফলে পরিবেশগত বিপর্যয়সহ জীব বৈচিত্র্য ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। মাঠ পর্যায়ে সংগ্রহীত এবং পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের তথ্যের আলোকে ইটভাটার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে সংস্থাটি।
পবা জানায়, অনেক ইটভাটায় সরকার নির্ধারিত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে না। এর মধ্যে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল-ক্লিনিক, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, লোকালয় ও বনাঞ্চলের আশপাশ, পাহাড়ের পাদদেশ এবং কৃষি জমিতে পরিচালিত হচ্ছে ইটভাটা।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান।
আবু নাসের খান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন সময় বেশ কিছু অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত বৈধভাবে আমদানি করা কয়লা অত্যন্ত নিম্নমানের ও উচ্চ সালফার যুক্ত। এই সালফার মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইট পোড়াতে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহার করায় সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক বায়ুদূষণ।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান তার সার্বিক পর্যালোচনায় বলেন, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণ পরিবেশ বিপর্যয় ও জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে। দেশে গাছ লাগানো আজ একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছি না। এর অন্যতম প্রধান কারণ ইটভাটায় নির্বিচারে কাঠ পোড়ানো।
আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার, নির্ধারিত মাত্রার সালফার যুক্ত কয়লা ব্যবহার, জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং সংশ্লিষ্ট আইন যথাযথভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে ইটভাটা সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। ইটভাটা সংশ্লিষ্ট আইন বাস্তবায়নে ভাটার মালিকদেরও আসতে হবে এগিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিআইডব্লিউটিএ-এর সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ও গ্রিন ফোর্সের সদস্যরা।