গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধি করুন

1

শীতকাল এলেই দেশে দেখা দেয় গ্যাসের সঙ্কট। শীতে গ্যাসের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। অনেক ক্ষেত্রে পাইপ লাইনে গ্যাস জমে যায়। এজন্য কলকারখানা, সিএনজি কিংবা বাসা বাড়িতে কমে যায় গ্যাসের চাপ। কোন কোন এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস সরবরাহ। এবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গ্যাসের সঙ্কট শুরু হয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহের পরিমাণ কমে গেছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। আগামী দুই সপ্তাহে ঘাটতি আরও বাড়বে। গ্যাসের সঙ্কটে দেশের বিঘ্নিত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন। গ্যাসচালিত বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে এক তৃতীয়াংশে। এ কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহেও তৈরি হয়েছে সমস্যা। শিল্প উৎপাদনে বিঘ্ন সৃষ্টিতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাতার ও ওমান থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিমাণ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
দেশে গ্যাসের উৎপাদন ক্রমশ কমে যাওয়ায় এলএনজি আমদানির মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এলএনজি আমদানি হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কমেছে আমদানি। নতুন গ্যাস অনুসন্ধানেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এক্ষেত্রে গ্যাসের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জ্বালানি বিভাগ। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে হলে জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর বিকল্প নেই। এমন কিছু খাত রয়েছে যেখানে গ্যাস ছাড়া উৎপাদনের চাকা সচল রাখা সম্ভব নয়। এজন্য গ্যাস সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান জরুরী হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যমান সমস্যার দ্রুত কোন সমাধান নেই। দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় শুধু আমদানি করে সমস্যা নিরসন করা যাবে না। এজন্য স্থলভাগে অনুসন্ধান কাজ দ্রুততর করতে হবে। সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের যে চ্যালেঞ্জ তা কাটিয়ে উঠতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। এছাড়া অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনের জায়গাগুলোতে গ্যাস সরবরাহে রেশনিং করতে হবে। গৃহস্থালী কাজে গ্যাস সংযোগ অনেক আগেই বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যানবাহনে এলএনজি সরবরাহ বাড়িয়ে সিএনজি নিরুৎসাহিত করতে হবে। গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধির জন্য গ্রহণ করতে হবে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।