শেখ হাসিনার প্রশংসিত ভূমিকা

9

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে অসংখ্য উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্বেও নানা ইস্যুতে সাহসী বক্তব্য রেখেছেন। তৃতীয় বিশ্বের স্বার্থ সংরক্ষণে তার এসব বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিতও হয়েছে। এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব রাজনীতিতে দরিদ্র মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতাদের অনেক ফোরামে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তাকে সারা পৃথিবীতে শুধু ব্যাপক পরিচিতিই এনে দেয়নি, নির্যাতিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করেছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও দেশের অভ্যন্তরীণ অনেক সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধুর মতো বিশ্বের দরিদ্র মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর। বিশেষ করে জলবায়ু নিয়ে অনুন্নত রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধি হয়ে ধনী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। প্রতিটি জলবায়ু সম্মেলনে তিনি নিজে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন এবং ধনী রাষ্ট্রগুলোর পরিবেশ দূষণে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর পক্ষে নানা দাবিতে থাকেন সোচ্চার। এই ভূমিকায় ইতোমধ্যে তিনি তৃতীয় বিশ্বের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
বর্তমানে শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্ব নেতাদের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বক্তৃতা করেন। এ সময় তিনি ছয়টি সুপারিশ পেশ করেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্তেনিও গুতেরেস যৌথভাবে এই বৈঠকের আয়োজন করেন। শেখ হাসিনা তার ছয়টি সুপারিশের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তির কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়ের ওপরও জোর দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লোকসান এবং ক্ষয়ক্ষতির সমস্যা এবং সেইসঙ্গে বৃহৎ আকারের জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি মোকাবেলা জরুরী।
তিনি বলেন, অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈশ্বিক পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সরকার সবুজ প্রবৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি২০-এর চেয়ার হিসেবে আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করা।’
উন্নত বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি সম্মান রেখেও তিনি নির্দ্বিধায় বলেছেন, আজকে জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনে ধনী দেশগুলোই বেশি দায়ী। শেখ হাসিনার এই সাহসী উচ্চারণ শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিই যে উজ্জ্বল হয়েছে তা নয়, আনুন্নত সকল রাষ্ট্রের দরিদ্র মানুষ শেখ হাসিনা তাদের পরিত্রাতা হিসেবে মনে করছেন।