করোনায় সরকারি প্রণোদনার ৮৬ শতাংশই ভুয়া – মির্জা ফখরুল

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা মহামারিকালে সরকার যে ২৮ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে এর শতকরা ৮৬ শতাংশই ভুয়া বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা যে নামগুলো দিয়েছে সেখানেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামগুলো দিয়েছে, যাতে করে তারা সেই টাকা নিয়ে নিতে পারে। এটা সর্বক্ষেত্রেই হচ্ছে।’
সোমবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএনপি প্রয়াত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। ‘স্মৃতিতে অম্লান’ শীর্ষক এই স্মরণ সভার আয়োজন করে আবদুল আউয়াল খান ফাউন্ডেশন।
সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনে জনজীবন বিপন্ন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারির সময়ে এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। তাদের উদাসীনতা, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও দুর্নীতি আজকে দেশ এবং দেশের মানুষের জীবন বিপন্ন-জীবিকা বিপন্ন করে ফেলেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে বেড নেই, অক্সিজেন নেই, আইসিইউ বেড নেই এবং ওষুধ নেই। এমন একটা অবস্থা সরকার সৃষ্টি করেছে। এর ভয়াবহতায় জনগণের জীবন আজকে বিপন্ন। করোনা হবে চিকিৎসা পাবে না, ভুল চিকিৎসা হবে, গরিব মানুষ চিকিৎসার অভাবে রাস্তায় পড়ে থাকবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
‘তথাকথিত পার্লামেন্টে’ চিৎকার করে আওয়ামী লীগের নেতারাই বলছে- ‘আমলা এখন সবকিছু দখল করে নিয়েছে’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমলারা দখল করে নিয়েছে এজন্য যে, তাদের দখল করতে দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি নেই, রাজনীতিবিদরা দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই সরকার কার ওপরে টিকে আছে। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আমলা এবং কিছু দুর্নীতিপরায়ন ব্যক্তিদের যোগসাজশে আজকে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে হবে। সেজন্য যেটা প্রয়োজন- আমাদের কখনো হতাশ হওয়া যাবে না, হতাশা ও ব্যর্থতা নিয়ে এগুনো যাবে না। আমাদের আশাবাদী ও জনগণকে সংগঠিত করতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের যে মূল লক্ষ্য ছিল তা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন এটা সারাদেশের মানুষের দায়িত্ব। এই সরকারকে সরিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বটা বেশি, কারণ বিএনপিকেই এর (সরকারকে সরানোর) নেতৃত্ব নিতে হবে। আমাদের অবশ্যই আশাবাদী ও জনগণকে সংগঠিত করতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন। অনেক বাধা-বিপত্তি, অনেক সুবিধা-অসুবিধার মধ্যেও কাজ হচ্ছে। সেই কাজগুলোকে আমাদের একত্রিত করতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি এবং ধরে রাখতে পেরেছি। বিএনপিকে অনেকবার ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। অনেকবার ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু কখনোই ভেঙে ফেলতে পারেনি। কারণ একটাই আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দর্শন দিয়েছেন, সেটা জনগণের অন্তুরের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে।’
আবদুল আউয়াল খান ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক হুইপ মনিরুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ।