উচ্চশিক্ষা ব্যাহত

11

অন্য সব খাতের মতো দেশের শিক্ষা খাতও করোনার অভিঘাতে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বস্তরে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে। এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে প্রায় ১৪ মাস ধরে বন্ধ থাকায় বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অনলাইন ক্লাস চললেও পরীক্ষা না থাকায় অনেকটাই গতি হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অনেকেরই এসব ক্লাসে অংশগ্রহণের আগ্রহ নেই। আবার প্রয়োজনীয় ডিভাইস না থাকা, ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণেও অনেকেই ক্লাসে অংশ নিতে পারেননি। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন ব্যাবহারিকনির্ভর উচ্চশিক্ষা। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা ব্যাবহারিক ক্লাস না করে অনেকটাই অন্ধকারে আছেন। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিটি শ্রেণির তিনটি সেমিস্টার, এমনকি কোনো কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় চারটি সেমিস্টার শেষ করেছে। রেগুলার অনলাইন ক্লাস নিয়েছে, অনলাইনে পরীক্ষা নিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে যাঁরা ছিলেন তাঁদের যথাসময়ে না হলেও দুই-তিন মাস বেশি সময় নিয়ে বের করে দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২০২০ সালের মার্চ মাসে যেখানে ছিল ঠিক সেখানে না হলেও এগিয়েছে খুবই অল্প।
দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকেন মোট এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। আর শিক্ষক আছেন প্রায় ১৫ হাজার। তাঁদের ২৪ মের আগে টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কতজন শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছেন, সে তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হাতে নেই। আগামী ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৭ মে থেকে হলগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। তবে এর আগেই আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার টিকা দেওয়া হবে বলে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী। দেশে এখন দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনেক বেশি। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও আছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার তারিখ পিছিয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বড় সেশনজটে পড়বে।
নতুন জীবনব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে অনলাইন ক্লাসের বিষয়টি নতুন করে ভাবতেই হবে। উচ্চশিক্ষায় সেশনজট কাটাতে এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।