দক্ষিণ সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষা বাঁধের বেহাল দশা

8

একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করার কথা আজ থেকে দেড়মাস আগে, কিন্তু দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করে বেহাল দশা পরিলক্ষিত হয়েছে। উপজেলার পূর্বরীরগাঁও ও দরগাপাশা ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওর ঘোরে দেখা যায় এখনো কোনো বাঁধের কাজ শুরু হয়নি। এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলছেন যারা কাজ শুরু করেনি তাদের পিআইসি বাতিল করা হবে। পিআইসির লোকজন বলছেন ওয়ার্ক অর্ডার না পাওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না, দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষেদ চেয়ারম্যান বলছেন আজ শনিবার থেকে কাজ শুরু হবে।
শুক্রবার হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির উদ্যোগে হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করতে গিয়ে হাওরের কোথায় বাঁধ হচ্ছে তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবারও মাটি কাটবে কি না সন্দেহ করছেন হাওর নেতারা।
দুপুরে হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ জালাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ, সহ সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইজাজা হোসেন চৌদুরী মাহফুজ, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক ডা: নজরুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল ইসলাম মিলন, নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান তালুকদার, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আল, সৈয়দ আসাদুজ্জামান আসাদ, শিমুলবাঁক ইউনিয়ন আহ্বায়খ জাহাঙ্গীর আলম সহ খাইও হাওর উপ-প্রকল্পের কি:মি: ৬.৮৬৬ হতে কি:মি: ৮.৮৭৬ ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও মেরামত কাজের পিআইসি নং ২৫ এ গিয়ে দেখা যায় বাঁধে কাজ শুরু হয়নি। এ প্রকল্পের সভাপতি হচ্ছেন, জুনেদ আহমদ ও সেক্রেটারী মুজিবুর রহমান। এ প্রকল্পে বরাদ্ধা ধরা হয়েছে ১৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা, একই হাওরের পিআইসি নং ২৬ এ গিয়ে দেখা যায় বাঁধে কাজ শুরু হয়নি। এ প্রকল্পের সভাপতি হচ্ছেন, ফজলুর রহমান ও সেক্রেটারী সজিব নূর। এ প্রকল্পে বরাদ্ধা ধরা হয়েছে ২১ লক্ষ ১হাজার টাকা এ ভাঁধেও কাজ শুরু হয়নি।
দরগা পাশা ইউনিয়নের কাঁচিভাঙ্গা হাওর কিঃ মিঃ ০.১৫০ হতে ২.৯৬৭ কিঃমিঃ বাঁধের পিআইসি নং ০৬ এ গিয়ে দেখা যায় বাঁধে কাজ শুরু হয়নি তবে দুর্বাঘাস পরিষ্কার করা হয়েছে ১০ গজ জায়গায়। এ প্রকল্পের সভাপতি হচ্ছেন, আবু খালেদ চৌধুরী ও সেক্রেটারী মিসবাহ উদ্দিন। এ প্রকল্পে বরাদ্ধা ধরা হয়েছে ১৪ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা, জামখলার হাওর পিআইসি নং নং ০২ এর সভাপতি আফরোজ মিয়া, সেক্রেটারী রাহেল চৌধুরী, বাঁধের বরাদ্দ ১৬ লক্ষ ১৩ হাজার, পিআইসি নং ৩, সভাপতি জগলু, সেক্রেটারী বাচ্চু মিয়া, এ প্রকল্পে বরাদ্দ ১৯ লক্ষ ৪০ হাজার, কাঁচিভাঙ্গা হাওরের পিআইসি নং ০৭, সভাপতি বদরুল সেক্রেটারী জবর আলী, এ প্রকল্পে বরাদ্দ ৭.৩৩ হাজার, খাইর হাওর পিআইসি নং ২৭, সভাপতি ঝয়জুল হোসেন সেলাল, সেক্রেটারী ইয়াওর মিয়া চৌধুরী এ প্রকল্পে বরাদ্দ ১২ লক্ষ ৬৯ হাজার, পিআইসি নং ২৮, সভাপতি মঈনুল ইসলা, সেক্রেটারী হারুন মিয়া এ প্রকল্পে বরাদ্দ ৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে কোথাও কাজ শুরু হয়েছে এমন দেখো যায়নি। বিশেষ করে খাইর হাওরের কোনাডুবি ও চাতলি ভাঙ্গাগুলো বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন এ ভাঙ্গাগুলো বন্ধ না হলে ফাল্গুন মাসে নদীতে পানি একটু বৃদ্ধি পেলেই হাওরের প্রবেশ করবে। জামখলা হাওরের বাঁধ কাম রাস্তা ছয়হারা সলফ অংশ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে এদিকেও বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে জামখলা হাওর। কাঁচিভাঙ্গা হাওরের ৬ নং পিআিইসিতে গিয়ে দেখা যায় ১০ গজ জায়গায় দুর্বাঘাস পরিষ্কার করা হয়েছে। এ সময় কৃষকরা প্রতিনিধি দলের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক জানান, আমরা এখনও ওয়ার্ক অর্ডার পাইনি কিভাবে কাজ শুরু করবো এরপর ও আমরা দুর্বাঘাস পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। খাইর হাওরের কোনাডুবি ভাঙ্গা থেকে হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মীকে ফোন দিলে তিনি জানান, আমরা গত কালের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা কাজ শুরু করবে না সেসব পিআইসি বাতিল করে নতুন পিআইসি করা হবে।
দরগাপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন জানান, এখনো আমার ইউনিয়নের কোন বাঁধে কাজ শুরু হয়নি, আশা করি আগামী শনিবার থেকে কাজ শুরু হবে।