সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ গ্যাস সংযোগ স্থাপনসহ বিভিন্ন দাবী জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের

6

স্টাফ রিপোর্টার :
জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের ঘরে ঘরে দ্রুত গ্যাস সংযোগ স্থাপন, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর এবং কানাইঘাট উপজেলায় টেকনিক্যাল কলেজ অথবা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের সভাপতি হোসাইন আহমদ।
লিখিত বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর জৈন্তিয়ার (কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট এবং কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা) এক ঐতিহাসিক প্রয়োজনে মরহুম জননেতা এম. তৈয়বুর রহমান এর উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ ১৯৮০ সালের ১৭ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা, যোগাযোগ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়নকে সামনে নিয়ে জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ এর আন্দোলনের ফসল হচ্ছে আজকের জৈন্তিয়া ডিগ্রী কলেজ। এই ছাত্র সংগঠন নিরেপেক্ষ মুখপাত্র হিসেবে বৃহত্তর জৈন্তিয়ার সর্ব মহলে সমাদৃত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কুচক্রী মহল বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে এবং আমাদের ছাত্র পরিষদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটি এবং এর সভাপতিকে নিয়ে মিথ্যা, অসত্য এবং বানোয়াট কথা বার্তা বিভিন্ন মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। আমরা বৃহত্তর জৈন্তিয়াবাসী এই বানোয়াট এবং মিথ্যা বক্তব্য ও সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ঐতিহ্য ধ্বংসে লিপ্ত তথাকথিত নামধারী কুচক্রী মহল যদি অনতি বিলম্বে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রদর্শন না করে তবে বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ছাত্র সমাজ এবং ১৭ পরগনার নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আমরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব।
তিনি বলেন, বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ছাত্র সমাজ ও জনসাধারণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের প্রধান দাবিগুলো হলো। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার সর্বত্র অর্থাৎ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের ঘরে ঘরে জ্বালানী হিসাবে অতি দ্রুত গ্যাস সংযোগ স্থাপন করা। কোম্পানীগঞ্জের ন্যায় গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর এবং কানাইঘাট উপজেলায় টেকনিক্যাল কলেজ অথবা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ সহজলভ্য করা। বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক টেকসই উন্নয়নের জন্য ইকোনমিক জোন বা শিল্প পার্ক স্থাপন করা। পার্শ্ববর্তী ভারতীয় সীমানার পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীসমূহের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে ফ্লাশ ফ্লাড থেকে রক্ষা করতে সুরমা, গোয়াইন, পিয়াইন, সারি, ডাউকি ও ধলাই নদী জরুরী ভিত্তিতে খনন করা । জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত এবং পুলিশি সেবা জনগনের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ি, জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এবং গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও সালুটিকরে থানা পুলিশের কার্যক্রম শুরু করা অত্যন্ত প্রয়োজন । যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহন সহজলভ্যে সিলেট-লোভাছড়া, সিলেট-তামাবিল, সিলেট-ভোলাগঞ্জ রেল লাইন স্থাপন করা প্রয়োজন।
এ সময় তিনি কানাইঘাটের মতো গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা সদরকে অনতিবিলম্বে পৌরসভা রূপান্তর করার দাবী জানান। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার জনগণের স্বার্থে মহাল সামিল জলকর আইন বাস্তবায়ন করারও দাবী জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রাসেল আহমদ, রুপক চন্দ্র দাস, ওয়ারিছ উদ্দিন, মো. তাহির চৌধুরী, আবু তায়েফ ও আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক প্রণত কান্ত দেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম বাসিত তুহিন, গোলাম রেজওয়ান রাজিব ও মামুনুর রশীদ মামুন, সাংগঠনকি সম্পাদক সোহানুর রহমান আবির, আল আমিন আহমদ চৌধুরী, তমিজুর রহমান, আরিফ মো. আল রিফাত, কাওসার মাহমুদ সোহেল ও বদরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক রফিউল আলম ফলিক, প্রচার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, পর্যটন সম্পাদক আব্দুল কাদির সুমন ও সদস্য আরিফ রশীদ তুহিন।