৬ মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে

30

কাজিরবাজার ডেস্ক :
চলতি অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, অনেকেই সেই সুযোগটি নিয়েছেন। গত ১ জুলাই অর্থবছর শুরু হওয়ার পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৫০ ব্যক্তি ঘোষণা দিয়ে অপ্রদর্শিত আয়ের কালো টাকা সাদা করেছেন। এভাবে গত ছয় মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেনের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনবিআরের তথ্য বলছে, গত ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত যেখানে মাত্র সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করেছিলেন, সেখানে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৫০ জন অপ্রদর্শিত আয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বা কালো টাকা সাদা করেছেন। ফলে ৬ মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিসেম্বরেই সাদা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
এনবিআরে জমা দেওয়া রিটার্ন থেকে জানা যায়, নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, ফ্ল্যাট ও জমি কিনে কালো টাকা সাদা করেছেন ৭ হাজার ৪৪৫ জন। সরকার এই খাত থেকে কর পেয়েছে ৯৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন ২০৫ জন। তাদের কাছ থেকে সরকার কর পেয়েছে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এই কালো টাকা সাদা করার ফলে দেশের অর্থনীতিতে ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা যুক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবারের বাজেট বলা হয়েছে—দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের চলতি অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি বর্গমিটারের ওপর নির্দিষ্ট হারে এবং নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা যেকোনও সিকিউরিটিজের ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করলে কর্তৃপক্ষসহ কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না। একই সময় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করলে, ওই বিনিয়োগের ওপর ১০ শতাংশ কর দিলে, আয়করসহ কোনও কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন করবে না। এর বাইরে বিনিয়োগ চাঙা করতে বিদায়ী অর্থবছর থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে আসছে সরকার। সেখানে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকৃত অর্থের ১০ শতাংশ কর দিলেই প্রশ্ন করবে না এনবিআর। ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সুযোগ আছে।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত দেশে ১৭ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা হয়েছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ওই সময় ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই সুযোগ নিয়েছিল। তখন ৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা সাদা করা হয়। তবে দেশে ঘোষণা দিয়ে প্রথম কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ১৯৭৫ সালে, সামরিক আইনের আওতায়।