সৌদিগামীদের দুর্ভোগ ঠেকান

12

করোনার কারণে স্বদেশে আটকেপড়া সৌদি প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরার সঙ্কট এখনও পুরোপুরি দূর না হওয়ার বিষয়টি অস্বস্তিকর। যদিও সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আন্তরিকতার সঙ্গেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবুও উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন প্রবাসীরা। তাদের মানসিক অবস্থা না বোঝার কিছু নেই। দীর্ঘকাল কর্মহীন ও উপার্জনহীন থাকার কারণে প্রত্যেকেরই পরিবারে অস্বস্তি ও বিপন্নতা নেমে এসেছে। এক পর্যায়ে কাজে যোগদানের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল তাদের। যা হোক সৌদি সরকার বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আকামার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে কিছুদিন।
জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে শুরু করেছে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইট। স্বাস্থ্যবিধির কারণে যেতে না পারা অনেকে শেষ পর্যন্ত যেতে পারছেন। তবে শুধু জেদ্দার ফ্লাইট পরিচালিত হওয়ায় মদিনার যাত্রীরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। এজন্য তাদের জেদ্দা থেকে মদিনা যেতে আবার গুনতে হবে কয়েক শ’ রিয়াল।
মনে রাখতে হবে দেশের শ্রমিকদের জন্য করোনায় বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে বিদেশের শ্রমবাজারের সার্বিক পরিস্থিতিকে। বিভিন্ন দেশে লকডাউন, জরুরী অবস্থার কারণে শিল্প-কারখানা, সেবা ও নির্মাণ খাত বন্ধ হওয়ায় কাজ হারিয়েছেন অনেক বাংলাদেশী অভিবাসী। গত পাঁচ মাসে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন সোয়া লাখের বেশি কর্মী। ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ২ লাখ। অন্যদিকে করোনার আগে বিভিন্ন সময় ছুটিতে দেশে এসে আটকা পড়েছেন প্রায় ২ লাখ কর্মী। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই মুহূর্তে ৫ লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মহীন রয়েছেন। শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়েছেন নতুন করে আরও প্রায় ৩ লাখ মানুষ।
আটকেপড়া সৌদি প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আরও সক্রিয়তা কাম্য ছিল। তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে তৎপরতা থেমে নেই। দাম্মাম রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তিনি আকামার মেয়াদ ও ভিসা দেয়ার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সৌদি আরবের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। দেশবাসীর প্রত্যাশা- সব সঙ্কট কেটে যাক, সৌদি আরবে প্রবাসীদের কর্মজীবনে সুবাতাস ফিরে আসুক।