দোয়ারাবাজারে চতুর্থ দফা বন্যায় ফসল ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি

26

দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় চতুর্থ দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, খাসিয়ামারা, কালিউরি, ধুমখালী ও ছাগলচোরাসহ উপজেলার সকল নদনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গোজাউরা, কানলা, নাইন্দা ও বন্দেহরিসহ উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও মাঠঘাট ভরে গিয়ে তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন জাতের অগ্রহায়ণী ফসলসহ রবিশষ্য। সুরমা, বগুলা, লক্ষ্মীপুর, নরসিংপুর, বাংলাবাজার ও দোয়ারাবাজার সদরসহ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঠ ও গোচারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় খাদ্যাভাবে গবাদি পশু-পক্ষি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। হাওরপারসহ গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারি বর্ষণ ও ঢলের তোড়ে শান্তিপুর ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ধসে মাটি সরে গিয়ে দোয়ারাবাজার-লক্ষ্মীপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সুরমা, বগুলা, লক্ষ্মীপুর ও বাংলাবাজার (আংশিক) সহ চার ইউনিয়নবাসী বিপাকে পড়েছেন।
একদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমন, অপরদিকে পরপর তিন দফা বন্যায় অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতি। আর এসব ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া ও দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধ করা দূরের কথা, পরিবার পরিজনসহ দু’বেলা খেয়েপরে বাঁচাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও আশানুরূপ ফলন নিশ্চিত করতে বুকে সাহস নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে চাষাবাদ সম্পন্ন করে সবেমাত্র ঘরে উঠেছেন কৃষকরা। তার উপর অতীতের তিনদফা বন্যার রেশ না কাটতেই আবার চতুর্থ দফা বন্যার আগ্রাসন। এ যেন ‘মারার উপর খাড়ার ঘা’।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে দোয়ারাবাজারে এ বছর আমনের চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬০ হেক্টর। বেসরকারি হিসাবে আরও বেশি হবে বলে জানান ভুক্তভোগিরা। কিন্তু আগামি দু’এক দিনের মধ্যে পানি হ্রাস না পেলে ধানের চারা পচে গিয়ে অগ্রহায়ণী ফসল পুরোদমে অনিশ্চিতের আশংকা করছেন অভিজ্ঞ মহল। তবে জমিতে ৫-৭ দিন পানি থাকলেও ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানান স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দায়িত্বশীলরা। পানিতে তলিয়ে যাওয়া চারায় আবারও ডেম গজিয়ে ফসল উৎপাদনে তেমন ব্যাঘাত ঘটবেনা বলে তারা জানান। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বর্ষণ ও পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।