নিশ্চিত করতে হবে চিকিৎসা সেবা

12

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা করা হয়েছে। অনেক হাসপাতালেই রাখা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন ওয়ার্ড। সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর পিপিই নেই জানিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকরা রোগীদের ফিরিয়ে দেন। কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সব হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের জন্য বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা দিলেও সমালোচনা ও গণপদত্যাগের হুমকির মুখে তা প্রত্যাহার করে সরকার। এখন পিপিই সরবরাহ করার পরও হাসপাতালে চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না। সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে চেম্বারে বসছেন না অনেক চিকিৎসক এবং অনেক জায়গায় টেকনিশিয়ানরা কর্মস্থলে না থাকায় রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাও বন্ধ আছে। অনেক রোগী কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন—এমন ঘটনা প্রায়ই আসছে গণমাধ্যমে। রোগী রেখে চিকিৎসকদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে কোনো কোনো স্থানে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সময় সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ জানান, কাউকে যেন ফিরিয়ে দেওয়া না হয়। একইভাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ না করে রোগী দেখার অনুরোধ করেন।
আগে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল। এখন অনেক বেসরকারি হাসপাতালও রোগী ভর্তি ও বিশেষজ্ঞ চেম্বার বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকে বন্ধ হতে শুরু করে প্রাইভেট চেম্বার; হাসপাতালগুলোও রোগী ফিরিয়ে দেয়। জ্বর ও সর্দি-কাশির উপসর্গ শুনলে সেই রোগীদের ভেতরে ঢুকতেই দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকরাও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসার জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর এসেছে গণমাধ্যমে।
সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও এই সংকটকালে সঙ্গে নিতে হবে। যাতে তারা রোগী ফিরিয়ে না দেয় বা রোগী দেখা বন্ধ না করে, এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্তে আসা জরুরি। নিশ্চিত করতে হবে কর্মরত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের পর্যাপ্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরণ। স্থানীয় পর্যায়ের প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ নিশ্চয়ই আছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো সক্রিয় হতে হবে।