কর্মসংস্থান নিশ্চিত করুন

4

স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন উন্নত অর্থনীতির। মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছিল বাংলাদেশ। জাতিসংঘ ঘোষিত স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিল প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনার আওতায়। আসছে জুনে শেষ হচ্ছে প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনার মেয়াদ। প্রথমটির সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার। আশা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ। দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনাকে তাই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে উচ্চ আয়ের দেশে যাওয়ার পথনকশা হিসেবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় অনুমোদন পেয়েছে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা। এর মূল লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণমূলক সমৃদ্ধি, যা শাসনব্যবস্থার কার্যকর প্রতিষ্ঠানাদি দ্বারা পরিচালিত হবে। যেখানে কার্যকর বিচারব্যবস্থা, গণমুখী জনপ্রশাসন, দক্ষ ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। রূপকল্প ২০৪১-এর দ্বিতীয় ভিত্তি গণতন্ত্রায়ণ। বিকেন্দ্রীকরণ হলো এর তৃতীয় স্তম্ভ। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিনির্মাণ হলো চতুর্থ স্তম্ভ। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য হলো রূপান্তরশীল অর্থনীতির সঙ্গে এদের সংগতি বিধান এবং যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে কৌশলগত সম্পর্ক, সম্পদ উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালন পদ্ধতি। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘রূপকল্প ২০৪১’ চারটি প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে জনগণ সম্মিলিতভাবে সুশাসন, গণতন্ত্রায়ণ, বিকেন্দ্রীকরণ ও সক্ষমতা বিনির্মাণ—এই চারটি প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণ করবে।’
রূপকল্প ২০৪১-এ জোর দেওয়া হয়েছে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রায়ণে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি বহুত্ববাদী পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কথাও বলা আছে প্রেক্ষিত পরিকল্পনায়। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় থাকবে, তার একটি প্রক্ষেপণ করা হয়েছে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনায়। সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যদি প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় ব্যর্থ হয়, উদ্ভাবন ও আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারে, যদি মানসম্মত প্রস্তুত করা পণ্য রপ্তানিতে নিম্ন মজুরি প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে না পারে, তবে মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকে পড়ার ঝুঁকি প্রবল হবে। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগুলো চিহ্নিত করে দূর করতে পারলেই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে না। কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা গেলে সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে। লক্ষ্যে পৌঁছানোর সক্ষমতাও অর্জন করবে বাংলাদেশ।