পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরী

43

গত সপ্তাহেই বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া গোপন প্রতিবেদনে জানায়, ব্যবসায়ী, আড়তদার ও মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে নিত্যপণ্যের বাজার। পর্যাপ্ত উৎপাদন ও মজুদ থাকা সত্ত্বেও আসছে রমজান মাস ঘিরে ছোলা, মটর ডালসহ আরো কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা। চীনের করোনাভাইরাসে ‘আমদানি বন্ধের’ গুজব ও অজুহাত তুলে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ানোরও অপচেষ্টা আছে। রমজান মাসে ব্যবসায়ীরা যাতে নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া না বাড়াতে পারেন, সে জন্য অসৎ ব্যবসায়ীদের নজরদারিতে আনা, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া এবং টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকিতে পণ্য বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। পুলিশের বিশেষ শাখার ওই প্রতিবেদন বলছে, দেশে কিছু কিছু পণ্যের মজুদ চাহিদার চেয়ে বেশি। এর পরও বাজারে চাল-ডাল-পেঁয়াজ-রসুন, ভোজ্য তেল-চিনিসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়তি। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, আমদানি, মজুদ থাকার পরও এরই মধ্যে চাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। ভোজ্য তেল, আদা, রসুন, চাল-চিনির সঙ্গে দাম বাড়ানো সহ করোনাভাইরাসের প্রভাবে আমদানি বন্ধ হওয়ার পর খাতুনগঞ্জে রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা। সিলেটেও রসুনের দামে ঊর্ধ্বগতি। রাজশাহীতে বেড়েছে চালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম।
সরকারের গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যেই যখন বাজার সিন্ডিকেটের তথ্য আসে, তখন বুঝতে হবে দুর্বল নজরদারির কারণেই সিন্ডিকেটের হাত থেকে বের করে আনা যাচ্ছে না দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্যের সরবরাহ খাতে মধ্যস্বত্বভোগীর প্রভাব বাড়ার ফলে অভ্যন্তরীণ এবং আমদানি উভয় ক্ষেত্রেই পণ্যের দাম বাড়ছে। আইনগত কাঠামোতে উৎপাদক এবং সরবরাহকারীদের তথ্য-উপাত্ত নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে আনা সম্ভব না হলে বাজারের লাগাম টেনে ধরা কঠিন হয়ে পড়বে। ব্যবসায়ীদের কাছে এখন নতুন অজুহাত আছে, করোনাভাইরাস। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব যতটা ভয়াবহতার কথা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ততটা নাও হতে পারে। এটা সরকারকে গভীরভাবে দেখতে হবে। অনেক ব্যবসায়ী নেতারও ধারণা সুযোগসন্ধানীরা ফায়দা লুটছে।
সামনে রোজা। এখনই পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আটঘাট বেঁধে না নামলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তাঁদের মতে, সরকারকেও এখন থেকেই বিকল্প চিন্তা করতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।