আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের ॥ সভাপতি ছাড়া যে কোন পদে পরিবর্তন আসতে পারে

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি পদটি ছাড়া অন্য যে কোন পদে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে একটা পদে কোন পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া আমরা কেউ অপরিহার্য না। তিনি এখনও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক, অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।
ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত দফতর উপ-কমিটির বৈঠকে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসবে কি না, তা সভাপতিই ঠিক করবেন। পরিবর্তন হলেও আমরা স্বাগত জানাব, আর তিনি যদি রাখেন, সেটাও তার (শেখ হাসিনা) ইচ্ছা। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি আগ্রহী নই। তিনি বলেন, সভাপতি ছাড়া এর পরের পদটা কাউন্সিলরদের মাইন্ড সেট করে দেয়। সেটাও তিনি (শেখ হাসিনা) ভাল করে জানেন। দল কীভাবে চলবে, কাকে দিয়ে চলবে- সেটাও তিনি জানেন। তিনি যেটা ভাল মনে করবেন, সেটাই করবেন। পরিবর্তন করলেও তার ইচ্ছা, তিনি কমিটি গঠনে যা ডিসাইড করবেন, এ ব্যপারে আওয়ামী লীগের কারও কোন কথা থাকবে না।
আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আচরণ ক্ষমার অযোগ্য দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আচরণ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। আদালত প্রাঙ্গণে তারা রণাঙ্গন সৃষ্টি করেছে, এটা সবাই দেখেছে। আদালতের ভেতরে শেষ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতিকে কমেন্ট করতে হয়েছে- ‘আমি এমন ঘটনা কখনও দেখিনি, বাড়াবাড়ির একটা সীমা আছে’। বাস্তবে আদালতে বিএনপি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন দুরভিসন্ধি করছে।
এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোন রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়নি যে রাজনৈতিকভাবে সরকার মুক্তি দিতে পারে। এটা হলো দুর্নীতির মামলা। আর দুর্নীতির মামলায় সরকারের কিছু করার নেই। এটা আদালতের বিষয়। যদি রাজনৈতিক মামলা হতো, আজকে তারা কথায় কথায় বলে রাজনৈতিকভাবে আটকে রাখা হয়েছে, বন্দী করে রাখা হয়েছে। এগুলো মিথ্যা এবং সত্যের অপলাপ। বিষয়টি তারা জেনে শুনেই মিথ্যাচার করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা একেক জন একেক কথা বলেন। কেউ বলেন, দুর্বার আন্দোলন ছাড়া মুক্তি নেই। আবার কেউ বলেন আন্দোলন করার সময় এখনও হয়নি। তাদের নেতৃত্বের মধ্যে আন্দোলনে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে নানান কথা। আমাদের এখানে কি করার আছে? আমরা এখানে রাজনৈতিক মামলা হলে মুক্তির বিষয়টা বিবেচনা করতাম। এটা রাজনৈতিক কোন মামলা নয়। এটা দুর্নীতির মামলা।
বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা এখন আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। এখন এই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার দুরভিসন্ধি ছাড়া তাদের আর কিছু করার নেই। তিনি বলেন, বিএনপি এখন আদালত প্রাঙ্গণে, আদালতের ভেতরে যে হট্টগোল সৃষ্টি করেছে, এটাই এখন তাদের রাজনীতি। তারা এখন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, তারা এখন উস্কানি দেবে। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক করার জন্য তাদেরও একটা কারসাজি আছে, সেটাও আমরা তদন্ত করছি। এখনও তারা নীরব আছে তা না, তারা প্রত্যেকটি ঘটনায় ইন্ধন দিচ্ছে।
বিএনপি ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার’ করতে চাইছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) বারবার ডাক দিচ্ছে, কিন্তু পাবলিকের সাড়া পাচ্ছে না। গণআন্দোলন বলেন, গণঅভ্যুত্থান বলেন, পাবলিককে ছাড়া তো আর হয় না। পাবলিককে নিয়েই করতে হবে। সব ষড়যন্ত্র রুখতে আওয়ামী লীগও প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, এখন সাংগঠনিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুবই শক্তিশালী, সু-সংগঠিত, সুশৃঙ্খল পার্টি। তাদের সকল ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবে।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও দফতর কমিটির আহ্বায়ক পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে কমিটির সভায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।