ফুটবলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল

17

ফুটবলে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে টেনে তুলতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে বেরিয়েছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। তারই অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন তিনি। সকাল থেকে সারা দিন কেটেছে তাঁর ব্যস্ত সময়। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় পা রেখে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইনফান্তিনো। দুপুরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে যান সংস্থাটির কার্যালয়ে। এরপর সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ফুটবলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। দেশের ফুটবলের উন্নয়নে কী করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এমন এক সময়ে ঢাকায় এলেন, যখন বাংলাদেশের ফুটবল নতুন করে জেগে উঠতে শুরু করেছে। কয়েক দিন আগেই বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের খেলায় ভারতের সঙ্গে ড্র করেছে বাংলাদেশ। দেশের ফুটবল একসময় চরম দুঃসময় পার করেছে। অথচ দর্শক বিচারে এখনো দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। ফিফা প্রেসিডেন্ট যেমন উল্লেখ করেছেন, ‘বাংলাদেশ আসলে এমন একটা দেশ যারা শুধু ফুটবল খেলে বা ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখে না; বরং ফুটবলেই বাঁচে।’ বাংলাদেশে ফুটবলের ইতিবাচক সাড়া দেখে খুশি হয়েছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। তিনি মনে করেন, ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। এখানে বয়সভিত্তিক ও মেয়েদের ফুটবলে জোর দিতে বলেছেন তিনি। আমাদের দেশে বয়সভিত্তিক বঙ্গবন্ধু কাপ ও বঙ্গমাতা কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পেশাদার ফুটবলে বাংলাদেশ যথেষ্ট উন্নতি করেছে। ফুটবলের জনপ্রিয়তা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। ফুটবলে বিনিয়োগ দেশের জন্য লাভজনক উল্লেখ করে মেয়েদের ফুটবলে আরো বিনিয়োগ করতে বলেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। মেয়েদের ফুটবলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখনো অতটা কঠিন নয়। মেয়েদের ফুটবলে তুলনামূলক দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর যে সুযোগ আছে, তা বাংলাদেশ নিতে পারে—এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
ফুটবলের উন্নয়নে ক্রীড়াবান্ধব সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সারা দেশে ৪৯২টি মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ফুটবলে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রেরণা জোগানো হচ্ছে। দেশের বড় করপোরেট হাউসগুলোও ফুটবলের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসেছে। বিদেশি খেলোয়াড়রা এ দেশের বিভিন্ন ক্লাবে খেলছেন গত শতকের সত্তরের দশক থেকে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও বিদেশের পেশাদার ফুটবল লীগে অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ফুটবলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। এখন শুধু পৃষ্ঠপোষকতা ধরে রাখতে হবে। ঢাকায় ফিফা প্রেসিডেন্টের সফর নিশ্চিতভাবেই দেশের ফুটবল অঙ্গনকে নতুন করে উৎসাহিত করবে। দেশের ফুটবল উন্নয়নে যে সহযোগিতার কথা তিনি শুনিয়েছেন, তা আমাদের আশাবাদী করে। ফিফার সহযোগিতায় বাংলাদেশের ফুটবল হারানো দিন ফিরে পাবে বলে আমরা মনে করি।