নির্বাচিত হয়ে অনেকেই নিজেকে ‘মুই কি হনুরে’ ভাবসাব ধরেন – রাষ্ট্রপতি

23
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জনপ্রতিনিধিদের কারো ক্ষমতা দেখানো উচিত নয়। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের আচরণ ভালো থাকলেও পরে তা পাল্টে যায়। নির্বাচিত হয়ে অনেকে নিজেকে ‘মুই কি হনুরে’ ভাবসাব ধরেন। যেটি কারো কাম্য নয়।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কখনো হাওরের শিকড়ের কথা আমি ভুলিনি। বরং জীবনভর এই হাওর ও এলাকার মানুষদের নিয়ে চিন্তা করেছি। প্রতিটি হাওরেই কৃষকের সুবিধার জন্য সাবমার্সেবল রাস্তা করা হচ্ছে।
আবদুল হামিদ বলেন, নিকলী এলাকা থেকে গুণধর পর্যন্ত রাস্তা আছে। ওই রাস্তার নাম দিয়েছে আমার নামে। রাস্তাটার সেনশন আমি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু হাওরে এ রকম রাস্তা বানানোর সুযোগ নেই। যে কারণে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ফ্লাইওভারের মাধ্যমে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় রাষ্ট্রপতি মিঠামইনে সেনানিবাসের দক্ষিণ থেকে চার কিলোমিটার ফ্লাইওভার করে মরিচখালী-কিশোরগঞ্জ সড়কের সঙ্গে সংযোগ করে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান।
মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলমের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি শাহ আজিজুল হক প্রমুখ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদসহ সামরিক, বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সাতদিন সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ সদর থেকে হেলিকপ্টারে করে মিঠামইন উপজেলায় পৌঁছান। পরে সেখানে তাকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। তিনি গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে কামালপুর গ্রামের বাড়িতে যান। বাড়ির পাশের জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে বাবা হাজী মো. তায়েব উদ্দিন এবং মা তমিজা খাতুনের কবর জিয়ারত করেন রাষ্ট্রপতি।
সন্ধ্যায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন তিনি। পরে তিনি কামালপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সারা বছর চলাচল উপযোগী ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম সড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করবেন রাষ্ট্রপতি। বিকেলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৮৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে সম্মাননা এবং শিক্ষাবৃত্তি ও সেলাই মেশিন প্রদান অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন তিনি। এরপর নিজ বাড়িতে তিনি রাত্রিযাপন করবেন।
এর আগে, বুধবার (৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সফর করেন। এরপর বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ সদরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পর্যন্ত মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রাম উপজেলা সফর করবেন। এসময় তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন, সুধী সমাবেশে বক্তব্য প্রদান, মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় কাটাবেন।