ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান ॥ রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে

44
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন এবং ১৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সহ ৬৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
রোজার মাসে কোন নিত্যপণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের সমস্যা বা দাম বৃদ্ধি না হয় এবং শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ফসলি কৃষি জমি নষ্ট না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বেসরকারী বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আহ্বান, আসন্ন রমজানে চিনি, ডাল, ছোলা, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর যেন সমস্যা না হয়। রমজানে এসবের দাম যেন বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। রোজায় যেন কোন নিত্যপণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের সমস্যা না হয়। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত সরবরাহ যেন থাকে, সে বিষয়টিও আপনাদের দেখতে হবে।
শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কৃষি জমি যেন নষ্ট না হয় সেজন্য ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জমির স্বল্পতা আছে, আমার খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। আমার কৃষি জমি বাঁচাতে হবে। আবার পাশাপাশি শিল্পায়ন একান্তভাবে প্রয়োজন। শিল্পায়ন ছাড়া একটা দেশে কখনও উন্নয়ন হয় না। তাই কৃষি জমি নেয়ার দরকার নেই। যা নেয়া আছে সেগুলো আগে ভরুক, তারপর দেখা যাবে। ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। ফসলি জমি আপনারা নিয়েন না, আমরাও নেব না। তবে যারা জমির মালিক তারা যেন জমির দাম সঠিক সময়ে পায়। মানুষের জন্য আমরা কাজ করি। তাই মানুষের যেন কষ্ট না হয়। যাদের জমি তাদের পরিবারের সদস্যরা যেন যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ পায় সেদিকেও খেয়াল রাখার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শিল্প স্থাপনের উপযোগী ১১ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, নতুন ১৩ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত ১৬ শিল্প প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উৎপাদন উদ্বোধন এবং নতুন ২০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপনসহ ৬৫ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এমন অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী বুধবার তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরী, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সিটি ইকোনমিক জোন, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন এবং মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ, স্থানীয় গণপ্রতিনিধি, উপকারভোগী এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
৬৫ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী তার সূচনা বক্তব্য দেশী-বিদেশী-প্রবাসী যারাই আসবে তারা যেন বিনিয়োগ করতে পারে সে সুযোগ সৃষ্টি করার জন্যই অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের জমির স্বল্পতা আছে, আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। আমার কৃষি জমি বাঁচাতে হবে। আবার পাশাপাশি শিল্পায়ন একান্তভাবে প্রয়োজন। শিল্পায়ন ছাড়া একটা দেশ কখনও উন্নয়ন হয় না। আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কিন্তু সেই কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে কৃষি আমাদের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে আমাদের শিল্পায়নও প্রয়োজন। সে কথা চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা সারা বাংলাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলব। যেখানে দেশী-বিদেশী সব ধরনের বিনিয়োগ হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুই প্রথমে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তুলেছিলেন। এজন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাঙালীদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ আজ বাঙালীদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে নাই।
সরকার প্রধান বলেন, শিল্পায়ন কোথায় হবে, কীভাবে হবে সেই জায়গা আমরা ঠিক করে দেব। যত্রতত্র আমার কৃষি জমি নষ্ট হবে না। তিন ফসলের জমি সেগুলো নষ্ট হবে না। আমরা গবেষণা করে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেছি। বাংলাদেশকে আমাদের ক্ষুধামুক্ত করতে হবে, দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন আমাদের বাড়াতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশে যে কোন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক সময় আমাদের ফসল নষ্ট হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দুর্যোগকালে আমাদের খাদ্য মজুত করতে হবে। আবার যেন কারও কাছে হাত পাততে না হয়, আমরা যেন নিজেরা মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারি সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। সে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এ পরিকল্পনা ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেয়া। সেখানে আমাদের দেশী, বিদেশী, আমাদের প্রবাসী যারাই আসবেন তারা যেন বিনিয়োগ করতে পারে সেই সুযোগটাও সৃষ্টি করে দেয়া। একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে যদি আমরা এগুতে থাকি, তাহলে যে কোন একটা দেশকে উন্নত করা সম্ভব।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বেসরকারী খাত এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। তরুণ সমাজ তারা বিশেষ করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে, আমি এ জন্য প্রশংসা করি। অনেক তরুণ মুখ আমরা আজকে দেখি যারা কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগে আমাদের মাত্র একটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে আরও দুটো আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট করে দেই। আমরা আরেকটা এয়ারপোর্ট ভাল করে দিচ্ছি কক্সবাজারে। ঢাকারটায় আমরা থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। সৈয়দপুর এয়ারপোর্টকে আমরা উন্নত করে দিচ্ছি। রাজশাহী এয়ারপোর্ট আমরা চালু করেছি। বরিশাল চালু করেছি। এগুলো এক সময় বন্ধ ছিল। বিমানের যে বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল এখন অন্তত আমরা ড্রিম লাইনার নিয়ে এসেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ ভাগে উত্তীর্ণ হবে এ অর্থবছরে। আমাদের মাথাপিছু আয়ও আমরা ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলারে উন্নীত করছি। আমাদের অর্থনীতিটাকে সব সময় গতিশীল, কিন্তু এটা যেন স্থিতিশীল থাকে সে ব্যবস্থাটা আমরা রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের উন্নয়নটা হচ্ছে একেবারে তৃণমূল মানুষের কাছে। মানুষের যেন ক্রয় ক্ষমতাটা বাড়ে এবং দেশে যেন আমার বাজার সৃষ্টি হয় সেই চেষ্টা ও পদক্ষেপ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানটা এমন চমৎকার একটা জায়গায়, এখান থেকে বিশ্বের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সব জায়গায় যাওয়া যাবে। প্রতিটি জায়গায় একটা ভাল মার্কেট পাওয়া যাবে। সেই সুযোগটা আমাদের রয়েছে। সেভাবে আমরা সমুদ্র বন্দর করে দিচ্ছি, গভীর সমুদ্র বন্দর আমাদের তৈরি হচ্ছে। সব দিক থেকেই আমরা কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে সুযোগটা সৃষ্টি করে দেয়া। আমাদের সব কাজের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে কর্মসংস্থান। আমার দেশের কোন তরুণ বেকার থাকবে না। তারা ট্রেনিং পাবে, পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বহুমুখী শিক্ষা, আমাদের প্রয়োজনীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমরা বিষয়ভিত্তিক করে দিচ্ছি।
সিটি ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী ও বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী রোজায় যেন চিনি, ডাল, ছোলা, তেলের সমস্যা না হয়। রমজানে যেন দাম বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানসহ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। এর আগে মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী একই আহ্বান জানান। এ সময় মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামালসহ ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের সাপ্লাই স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা আশা করছি, রমজান মাসে কোন সমস্যা হবে না।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। ফসলি জমি আমি নেব না। আমাদের শিল্পায়ন যেমন দরকার, তেমনিই কৃষি জমিও লাগবে। মীরসরাই ইকোনমিক জোন চরাঞ্চলে হচ্ছে। সেখানে কোন ফসলি জমি নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতেও কোন কার্যক্রমে ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। তিনি বলেন, আমরা ফসলি জমি নষ্ট করব না। মানুষের জন্য কাজ করি, সেই মানুষকে কষ্ট দেয়ার জন্য না। এক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের যেন কষ্ট না হয়। সে দিকে নজর দিতে হবে।
জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে কি-না এ বিষয়ে নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ সঙ্গে সঙ্গে দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের জমির তিনগুণ দাম দেয়া হচ্ছে। আর তারা তো টাকা পাবেই, তাদের বিকল্প জায়গার ব্যবস্থাও করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। পাশাপাশি তাদের ছেলে-মেয়েকে ওইসব ইকোনমিক জোনের কোম্পানি-কারখানায় চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার দেয়ার অনুরোধ করছি।
তার সরকারের উন্নয়ন একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য আমরা কেবল রফতানির ওপর নির্ভর করতে পারি না, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ে এবং দেশে যেন আমাদের বাজার সৃষ্টি হয় সে পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে আমরা সারা বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। এর ফলে এখন ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সবকিছু ঘরে বসেই মানুষ অনলাইনে সারতে পারছে।
দেশের পোস্ট অফিসগুলোকেও তার সরকার আধুনিকায়ন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থাৎ সমগ্র বাংলাদেশটাকে নিয়ে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করেছি। আপনারা যারা আজ দেশের শিল্পায়নের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তারা এর সুফল পাচ্ছেন। এ সময় আঞ্চলিক কানেকটিভি জোরদারে তার সরকারের বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) এবং বিসিআইএন-ইসি (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার) পদক্ষেপসমূহও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানটা এমন চমৎকার একটা জায়গায় যেখান থেকে প্রয়োজনে পূর্ব-পশ্চিম এবং উত্তর-দক্ষিণ সবখানেই যাওয়া যায়। এসব জায়গাতেই একটি ভাল বাজার পাবার সুযোগটা আমাদের রয়েছে। সে যোগাযোগটাও আমরা স্থাপন করেছি।
পায়রায় নতুন সমুদ্র বন্দর তৈরিতে তার সরকারের উদ্যোগও তুলে ধরেন সরকার প্রধান। তিনি বেসরকারী খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসা উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের কাজ হচ্ছে অবকাঠামোগত যে সুযোগগুলোর একান্ত প্রয়োজন সেই সুযোগটা সৃষ্টি করে দেয়া। এ সবের ফলে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি জনগণের জীবন-মানের উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, এ দেশের কোন তরুণ বেকার থাকবে না। তারা প্রশিক্ষণ পাবে, উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে তার ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি, পাশাপাশি শিক্ষার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি এবং তরুণদের জন্য বহুমুখী এবং বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই মর্যাদাকে ধরে রেখে বাংলাদেশকে আমাদের উন্নত-সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ, সেই লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী, ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা উদযাপন করব। তখন বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ। আমরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য তার সরকার পঞ্চবার্ষিক এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ‘ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন করেছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় মীরসরাই প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক গৃহায়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এ সময় ফেনীর স্থানীয় সংসদ সদস্য লে. জে. (অব.) মাসউদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনীর জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।