শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে বেহাল অবস্থা

50

জেড এম শামসুল :
সড়কটি শেওলা (জিরো পয়েন্ট) জকিগঞ্জ উপজেলা সদর পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ভারী যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ সড়কটি জিরো পয়েন্ট থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত যে ধরনের আঁকা-বাঁকা প্রতি কিলোমিটারে ৪/৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ মোড় রয়েছে। এগুলোতে যে কোন যানবাহন চলতে গিয়ে ধীর গতিতে চলতে হয়। এ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করার ফলে ছোট-ছোট যানবাহন এমনকি যাত্রীবাহী বাস সহ অন্যান্য যানবাহন চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্তায় চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের জিরো পয়েন্ট নামক স্থানের বড় ধরনের সাইন বোর্ডে লিখা রয়েছে এ সড়ক দিয়ে ভারি কোন ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধ। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা কেউ মানছে না। বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। ভারী যাবাহন চলাচল করায় যাত্রীবাহী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। জকিগঞ্জ উপজেলা সদরে কাস্টমস অফিস দিয়ে প্রতিদিন লোকজন আসা-যাওয়া সহ আমদানী-রফতানীর মালামাল সহ যাত্রীদের বহনকারী যানবাহন দুর্ঘটনায় নিহত আহতের সংখ্যা কম নয়। দিন-দিন দুর্ঘটনার সংখা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উল্লেখ্য জকিগঞ্জবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত শেওলা-জকিগঞ্জ সড়ক ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরই জকিগঞ্জ প্রস্তাবিত মহকুমার অধীনে বিয়ানীবাজার থানার যোগাযোগ রক্ষার লক্ষ্যে শেওলা-জকিগঞ্জ নির্মাণ করা অতিব জরুরী হয়ে পড়ে। ফলে জকিগঞ্জ থানার অধীনে বিয়ানী বাজারবাসী জকিগঞ্জে স্থাপিত আবাসিক আদালতে যাতায়াতের সুবিধার লক্ষ্যে শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কটি নির্মাণ করা জরুরী হয়ে থাকলেও তথাকথিত পাকিস্তান সরকার সড়কটি নির্মাণ করেনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এ সময় তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফের নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে দেখা করেন। প্রস্তাবিত মহকুমা জকিগঞ্জের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা করেন। এ আলোচনায় শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। কিন্তু শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের কোন উন্নয়ন হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারকে হটিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করে দেশে সামরিক আইন জারি করে। ১৯৭৭/১৯৭৮ সালে সামরিক আইন শীতিল করা হলে তৎকালীন সদ্য অবসর প্রাপ্ত ডি আই জি এম এ হক (বাঘা হক) সিলেট আসেন। এম এ হক সিলেট আসার সুবাদে এক সভার আয়োজন করা হয় এবং এ সভা সিলেট সারদা হলে অনুষ্ঠিত হয়। এ গুরুত্বপূর্র্ণ সভায় জকিগঞ্জের ৯ইউ/পি চেয়ারম্যানসহ সিলেট শহরে অবস্থানরত সর্বস্তরের ছাত্র জনতার উপস্থিতিতে জকিগঞ্জের সার্বিক সমস্যা তুলে ধরা হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের বিনিময়ে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কটি দিয়ে ১৯৯০ দিকে যানবাহন চলাচলা শুরু হয়। পর্যায় ক্রমে সড়কটির পাকা করণের কাজ সম্পন্ন হয়। সড়কটি শেওলা (জিরো পয়েন্ট) জকিগঞ্জ উপজেলা সদর পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ভারী যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ সড়কটি জিরো পয়েন্ট থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত যে ধরনের আঁকা-বাঁকা প্রতি কিলোমিটারে ৪/৫টি ঝুঁকিপূর্ণ মোড় রয়েছে এগুলোতে যে কোন যানবাহন চলতে গিয়ে ধীর গতিতে চলতে হয়। এ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করার ফলে ছোট-ছোট যানবাহন এমনকি যাত্রীবাহী বাস সহ অন্যান্য যানবাহন চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।