বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথের আ’লীগ-বিএনপির প্রার্থীরা ঢাকায়

80

জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে বিভিন্ন দল থেকে ১২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু ৯ জনের প্রার্থীতা বহাল থাকলেও (২ ডিসেম্বর) রবিবার বাছাই পর্বে বাদ পড়েন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরের এক সময়ের জনপ্রিয় ও আলোচিত আ’লীগ নেতা দুই দুইবারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানসহ তিনজন। বাকি দু’জনের একজন হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডক্টর এনামুল হক সরদার। যদিও তিনি ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ কিন্তু সরদারও আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া তিনি সাবেক এমপি ও সিলেট জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলয়ের নেতা হিসেবেও এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। অপরজন ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্যস্থ বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুর রব মল্লিক। তবে, বাছাইপর্বে টিকতে না পারলেও মনোনয়ন ঠেকাতে আ’লীগ নেতা মুহিবুর রহমান ও এনামলি হক সরদার ঢাকায় অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বিএনপির আব্দুর রব মল্লিক লন্ডনে থাকায় তার পিএস রুবেল আহমদও ঢাকায় রয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে লন্ডন থেকে বিএনপির আব্দুর রব মল্লিকও ঢাকায় পৌাঁছার কথা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে মুহিবুর রহমান আ’লীগের মনোনয়ন পাওয়ার কথা থাকলেও মনোনয়ন পান তৎকালীন যুক্তরাজ্য আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। ওইবছরের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় হেভিওয়েট প্রার্থী নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচতি হন শফিক চৌধুরী। এরআগে প্রার্থীতা নিয়ে শুরু হওয়া দ্বন্ধে শফিক চৌধুরী ও মুহিবুর রহমান বলয়ের নেতাকর্মীরাও দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
এরপর ২০১৪ সালে একইভাবে শফিক চৌধুরী ও মুহিবুর রহমান আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে মহাজোট থেকে জাতীয়পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। শফিক চৌধুরী মহাজোটের ইয়াহইয়া চৌধুরীর পক্ষে অবস্থান নিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিবুর রহমান। ওইবছরের ৫জানুয়ারি নির্বাচনে মুহিবুর রহমানকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন এহিয়া চৌধুরী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মুহিবুর রহমান মনোনয়ন না চাইলেও শফিক চৌধুরীর সঙ্গে পাল্লাদিতে মনোনয়ন চান যুক্তরাজ্য আ’লীগের বতর্মান যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। আর আনোয়ারুজ্জামানকে সহযোগীতার জন্যে দেশে ফিরে নৌকার পক্ষে প্রচারনায় নামেন মুহিব। কিন্তু এবারও শফিক চৌধুরী ও আনোয়ার চৌধুরীকে বাদ দিয়ে মহাজোটের শরিকদল জাপার এহিয়া চৌধুরীকে এ আসনটি দেওয়া হয়। আর এ বিষয়টি যেমন মানতে পারছেননা শফিক চৌধুরী বলয়ের নেতারা তেমনি পারছেন না আনোয়ার ও মুহিব বলয়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। ফলে হাঠাৎ করেই বারবার আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মুহিবুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন। কিন্তু বাছাইপর্বে এক শতাংশ ভোটারের সাক্ষরের সত্যতা যাচাইয়ে মিথ্যা দেখিয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। একইভাবে অপর স্ব^তন্ত্র প্রার্থী শফিক চৌধুরী বলয়ের নেতা ডক্টর এনামুল হক সরদারের মনোনয়নও বাদ দেওয়া হয়। ফলে মনোনয়ন বৈধ করতে নবও এয়ারে সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার ফ্লাইটে সিলেট থেকে এনাম সরদার ঢাকায় পৌঁছান। আর ওইদিন রাতের সড়ক পথে মুহিবুর রহমানও ঢাকায় পৌঁছান। অন্যদিকে পিএসকে আগে পাঠালেও মঙ্গলবার বিএনপি নেতা আব্দুর রব মল্লিকও ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।
ডক্টর এনামুল হক সরদার এ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজী না হলেও মুহিবুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তাই সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছে মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি আপিল করেছেন।