বরফ গলেনি দ্বিতীয় দফা সংলাপেও ॥ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ স্থগিত তবে জনসভা হবে

192
আওয়ামীলীগের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফা সংলাপে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফা সংলাপেও দুই পক্ষ বিরোধ মিটিয়ে একমত হতে পারেনি। সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে ১০ জন উপদেষ্টাকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় গণভবনে হয় এই দ্বিতীয় দফা সংলাপ। এর আগে ১ নভেম্বর দুই পক্ষ বসে সংলাপে।
আগের রাতে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার দ্বিতীয় দফা সংলাপে আসা অনিশ্চিত ছিল। আর তিনি না আসলে শেখ হাসিনাও বৈঠকে যোগ দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তবে শেষ পর্যন্ত কামাল হোসেন বৈঠকে আসেন এবং টেবিলের উল্টোপাশে আওয়ামী লীগ নেতারা বসেন শেখ হাসিনাকে নিয়েই।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। তবে ঐক্যফ্রন্ট সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তাব দেয়।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, এই প্রস্তাব তারা নাকচ করেছেন। বলেছেন, ‘উই উইল নট গো বিয়ন্ড কনস্টিটিউশন।’
ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবকে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার কৌশল হিসেবে দেখছেন কাদের। বলেন, এতে অসাংবিধানিক সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে আর এ সুযোগে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অংশ নেয়া দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোন সমাধান হয়নি। আরো সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। দুই পক্ষই তাদের অবস্থানে অনড়।’
আজ বৃহস্পতিবারের রাজশাহী অভিমুখে লংমার্চ স্থগিত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে শুক্রবারের সমাবেশ নির্ধারিত সময়েই হবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ, জনসভা এবং নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপ সফল না হওয়ায় এসব কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আসে।
গতকাল গণভবনে দ্বিতীয় দফা সংলাপেও ঐক্যফ্রন্টের সংসদ ভেঙে নির্বাচনের দাবি নাকচ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায়ের কথা বলেন। অন্যদিকে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বৃহস্পতিবারের রোডমার্চ করার কথা জানান।
তবে কিছুক্ষণ পর ফখরুল তার সিদ্ধান্ত পাল্টানোর কথাও জানান। বলেন, রোডমার্চ না করে তারা সরাসরি রাজশাহীর জনসভায় যোগ দেবেন।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা আছে ইসির। মির্জা ফখরুল বলেন, এই তফসিল তারা দেখতে চান।
এর আগে গতকাল বিকালে গুলশান কার্যালয়ে সংলাপ পরবর্তী পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ সময় বিভিন্ন পর্যায়ের কেন্দ্রীয় নেতারা নানা পরামর্শ দেন।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির সম্পাদকম-লীর একজন সদস্য বলেন, ‘আমরা তো কোনো আশা দেখছি না।’
তাহলে কোন পরামর্শ বেশি এসেছে- এমন প্রশ্নে ওই নেতা বলেন, ‘আন্দোলনের বিষয়েই বেশি মতামত এসেছে। এখন কেন্দ্রীয় নেতারাই সিদ্ধান্ত জানাবেন।’