ইসলামের আন্তর্জাতিক মানবিক নিরাপত্তার আইন

159

॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥

(পূর্ব প্রকাশের পর)
জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা ১৯৪৮-এর প্রস্তাবনাতে মানবাধিকারকে মানুষের সহজাত ও হস্তান্তরযোগ্য অধিকার হিসাবে বর্ণনা করে বলা হয়েছে, দ…ৎবপড়মহরঃরড়হ ড়ভ ঃযব রহযবৎবহঃ ফরমহরঃু ড়ভ ঃযব বয়ঁধষ ধহফ রহধষরবহধনষব ৎরমযঃং ড়ভ ধষষ সবসনবৎং ড়ভ ঃযব যঁসধহ ভধসরষু রং ঃযব ভড়ঁহফধঃরড়হ ড়ভ ভৎববফড়স, লঁংঃরপব ধহফ ঢ়বধপব রহ ঃযব ড়িৎষফ’’ ”গ. গড়ংশড়রিঃং, ঐঁসধহ জরমযঃং ধহফ ঃযব ড়িৎষফ ড়ৎফবৎ টঝঅ : ঙপপধহধ ঢ়ঁনষরপধঃরড়হ, ঘবি ণড়ৎশ, অঢ়ঢ়বহফরী ১. চ. ১৯৯” ঞযব ঝড়পরধষ ড়িৎশ উরপঃরড়হধৎু- এর মতে দদঐঁসধহ জরমযঃং ধৎব ঃযব ড়ঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃু ঃড় নব ধপপড়ৎফবফ ঃযব ংধসব ঢ়ৎবৎড়মধঃরাবং ধহফ ড়নষরমধঃরড়হং রহ ঝড়পরধষ ভঁষভরষষসবহঃ ধং ধৎব ধপপড়ৎফবফ ঃড় ধষষ ড়ঃযবৎং রিঃযড়ঁঃ ফরংঃরহপঃরড়হ ধং ঃড় ৎধপব, ংবী, ষধহমঁধমব ড়ৎ ৎবষরমরড়হ’’ দদজড়নবৎঃ খ. ইধৎশবৎ, ঞযব ঝড়পরধষ ডড়ৎশ উরপঃরড়হধৎু, ঘধংি চৎবংং. ৩ফ বফরঃরধ, ১৯৯৫, চ-১৭৩’’।
মানবাধিকার কেবল মানুষের মৌল-মানবিক চাহিদা (ইধংরপ যঁসধহ হববফং) এর পূরণই নয় বরং তা হচ্ছে মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন, প্রতিভার বিকাশ, চিন্তা (ঃযড়ঁমযঃং), বিশ্বাস (নবষরবাব), ও সৃজনশীলতার লালন। বলা হয়েছে “ঐঁসধহ ৎরমযঃং ধৎব পড়হপবৎহবফ রিঃয ঃযব ফরমহরঃু ড়ভ ঃযব রহফরারফঁধষ-ঃযব ষবাবষ ড়ভ ংবষভ-বংঃববস ধহফ ংবপধৎবং ঢ়বৎংড়হধষ রফবহঃরঃু ধহফ ঢ়ৎড়সড়ঃবং যঁসধহ পড়সসঁহরঃু “হাসান, ড. মোস্তফা, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৫”। সমকালীন বিশ্বে মানবাধিকার এর এই ধারণা বিকাশ লাভ করেছে প্রধানত পশ্চিমা বিশ্বের রাষ্ট্র ও সমাজনীতি এবং বিশেষত দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিকতাবাদের আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলে জাতিসংঘের উদ্যোগে”।
মানবাধিকার ও তার পরিধি : মানবাধিকার বলতে মানুষের সেই সব স্বার্থকে বুঝায় যা অধিকারের নৈতিক বা আইনগত নিয়মনীতি দ্বারা সংরক্ষিত হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, রাষ্ট্র কর্তৃক এর নাগরিকদের জন্য স্বীকৃত ও প্রদত্ত কতিপয় সুযোগ-সুবিধাকে মানবাধিকার বলে যেগুলো ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অপরিহার্য। “রেবা মন্ডল ও মো. শাহজাহান মন্ডল, প্রাগুক্ত, পৃ. ১”। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হওয়ার কারণে তার পক্ষে বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন সম্ভব নয়। তাই সামাজিক জীবনের উন্নতি ও অগ্রগতির ও বলিষ্ঠতার জন্য সমাজের এক সদস্যের প্রতি অন্য সদস্যের অনেকগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। এই দায়িত্বই হচ্ছে মূলত অধিকার। সুতরাং মানুষের প্রতি মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহই হল মানবাধিকার। জাতিসংঘ প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী মানবাধিকার হল মানুষের এমন কতগুলো জন্মগত অধিকার অনস্বীকার্য চাহিদা, যা মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তি ও বিবেককে পরিপূর্ণরূপে বিকশিত করার জন্য অতীব প্রয়োজন এবং সেগুলো মানুষের আত্মিক চাহিদা মেটায়। “জাতিসংঘ মানবধাকিার পঞ্চাশটি প্রশ্ন ও উত্তর ঢাকা : জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র, পৃ. ০৫”। মূলত মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সর্বজনীন, সহজাত, হস্তান্তরযোগ্য ও অলংঘনীয় অধিকার হল মানবাধিকার। এসব অধিকার তিনভাগে বিভক্ত-
এক : অর্থনৈতিক অধিকার, যথা- ভাত, কাপড়, বাসস্থান, চিকিৎসা, জীবিকা অর্জন, সম্পত্তির মালিকানা লাভ ও সংরক্ষণ, জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, যোগ্যতানুযায়ী কর্মসংস্থান এবং ধনীদের সম্পদে গরীব অনাথ ও নিরন্ন মানুষের অধিকার প্রভৃতি।
দুই : সামাজিক অধিকার, যথা- জাতি-ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে সমঅধিকার, মতামত প্রকাশ, জান-মালের নিরাপত্তা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, রাজনৈতিক তথা-নাগরিক অধিকার, সভা-সমিতি, সংগঠন ও জনমত গঠনের অধিকার, অবাধে ধর্ম-কর্ম সম্পাদনের অধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার লাভের অধিকার এবং বিবাহ-তালাক ইত্যাদির অধিকার।
তিন : নৈতিক অধিকার, যথা-অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা, শ্লীলতার প্রসার ও অশ্লীলতা প্রতিরোধ, সৎকর্মের বিকাশ ও অসৎকর্মের বিনাশ, পিতা-মাতা ও বয়ো: জ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, ছোটদের প্রতি ¯েœহ মমতা প্রদর্শন, সমাজের দরিদ্র, অসহায়, বিধবা, ইয়াতীম, অধিকার বঞ্চিত- মজলুম মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন, অতিথি- মুসাফিরদের আদর-আপ্যায়ন এবং সকল মানুষের প্রতি সৌজন্য আচরণ ইত্যাদি। “রহমান, মুহাম্মদ মতিউর, ইসলামে মৌলিক মানবাধিকার, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩”। বর্তমান বিশ্বে মানবাধিকার বলতে সেই সব অধিকারকে বুঝায় যা ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহিত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণায় (ঞযব টহরাবৎংধষ উবপষধৎধঃরড়হ ড়ভ ঐঁসধহ জরমযঃং) উল্লেখ করা হয়েছে। ৩০টি অনুচ্ছেদ সম্বলিত এই ঘোষণায় ২৫টি মানবাধিকার স্বীকৃত হয়েছে, যার মধ্যে ১৯টি নাগরিক ও রাজনৈতিক এবং ৬টি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক। “আব্দুল কাদের, ড. আ.ক.ম. মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) প্রেক্ষিত বর্তমান বিশ্ব, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৯”।
বিশ্বপ্রেক্ষিত ও মানবাধিকার : ১৮শ শতকের ফরাসী দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাঁ রুশো বলেন, গধহ রং নড়ৎহ ভৎবব, নঁঃ বাবৎুযিবৎব যব রং রহ পযধরহ, অর্থাৎ, মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন, কিন্তু সর্বত্রই সে শৃংখলাবদ্ধ। “প্রাগুক্ত”। যুগে যুগে দূর্বল শ্রেণীর মানুষের ওপর সবলদের নিয়ন্ত্রণ এবং মুষ্টিমেয় শাসক শ্রেণী কর্তৃক বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর উপর শাসন-শোষণের বন্ধনকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে বহুবিধ নিয়ম-নীতি আরোপের কারণে সাধারণ মানুষ তাদের প্রকৃতি ও স্বভাবের সাথে জড়িত অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। ফলে মানবিক বিকাশের স্বাভাবিক ধারা রুদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই মানুষকে সংগ্রাম করতে হয় শৃংখল মুক্তি তথা মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য।
“রাষ্ট্রের উৎপত্তির পূর্বেই কি অধিকারের জন্ম হয়েছে না কি রাষ্ট্রই অধিকার সৃষ্টি করেছে” রাজনীতি বিজ্ঞানের এটি বিতর্কিত বিষয়। ঔড়যহ খরপশব এর মতে, মানুষ স্বভাবতই কিছু অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার অধিকারসহ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার মানুষের অস্তিত্বের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। “প্রাগুক্ত”। আধুনিক রাষ্ট্রের উদ্ভবের আগে প্রাক-রাষ্ট্রীয় যুগেও মানুষ কিছু প্রাকৃতিক অধিকার (ঘধঃঁৎধষ জরমযঃং) ভোগ করতো। পরবর্তীকালে রাষ্ট্র কেবল সেই সব অধিকারকে অনুমোদন, সংরক্ষণ ও ভোগের নিশ্চিয়তা দিয়েছে মাত্র। পক্ষান্তরে অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রাকৃতিক অধিকার ভোগ করার এই ধারণার প্রতি তেমন গুরুত্ব দেন না। তাঁদের মতে, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বে মানুষের পক্ষে কোন অধিকার ভোগ করা সম্ভব নয়। কেননা, রাষ্ট্র অধিকার ভোগ করার নিশ্চয়তা না দিলে সে অধিকার অর্থহীন। সুতরাং রাষ্ট্র তথা নাগরিকদের জন্য বহুবিধ রাষ্ট্রীয় আইনই অধিকার সৃষ্টি করে এবং তা ভোগ করার নিশ্চয়তা দেয়। “রহমান, মুহাম্মদ হাবীবুর, অধিকার, কর্তব্য ও উন্নয়ন’ মানবাধিকার ও উন্নয়ন সমীক্ষা, ঢাকা: ১৯৯১, পৃ. ৬৩-৬৪”। বস্তুত মানবাধিকার ব্যক্তির মর্যাদা সম্মানের সাথে জড়িত একটি বিষয় যা মানব সমাজের নৈতিক মানদন্ডকে প্রকাশ করে। অতএব এটি কেবল ব্যক্তির কর্মক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নয়, গোটা বিশ্ব সমাজের মান-মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যও প্রয়োজন। সুতরাং একে সমুন্নত রাখার দায়িত্ব কেবল ব্যক্তির নয়, বিশ্বসমাজেরও। আর প্রতিটি রাষ্ট্র বিশ্বসমাজের এক একটি অঙ্গ হওয়ার কারণে এই মহান দায়িত্ব রাষ্ট্রের উপরও বর্তায়।
মানবাধিকার আইন ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট : মানবাধিকারের ধারণা যেহেতু মানুষ অতি প্রাচীনকাল থেকেই পোষণ করে আসছে, তাই এটি সংরক্ষণের বিষয়েও বিশ্বসমাজ তাদের চিন্তায় ত্র“টি করেনি। অদ্যাবধি প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রাচীনতম লিপিবদ্ধ আইন হল ব্যাবিলনের রাজা হাবুরাবী কর্তৃক প্রণীত “ব্যাবিলনীয় কোড” বা ‘হামুরাবী কোড’ “প্রণয়নকাল-আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২১৩০-২০৮৮ সাল)। লিখিত আইনের সূচনা হিসাবে এই কোড বিশেষ মূল্য বহন করে। এতে মানবাধিকার সংরক্ষণের কথা পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রাচীন গ্রীস ও রোমের সরকার পরিচালনা, নির্বাচন, বিচার ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও নাগরিকদের অংশগ্রহণের অধিকার প্রয়োগের প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। “বেরা মন্ডল ও মো. শাহজাহান মন্ডল, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫”। খ্রিস্টীয় ৭ম শতকে মানুষের অধিকার সংরক্ষণে ইসলাম অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন, মহানবী (সা.) এর সুন্নাহ ও হাদীস এবং “মদীনা সনদ” ও “বিদায় হজ্বে” প্রদত্ত মহানবী (সা.) এর ভাষণ মানবাধিকার তথা মানুষের অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করেছে।
কিন্তু পরবর্তীতে মানুষ যখন ইসলাম এবং মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শ হতে বিচ্যুত হয় এবং মানুষ যখন শাসক শ্রেণী হতে তাদের প্রাপ্য অধিকার হতে বঞ্চিত হয়, তখন তারা অধিকার আদায়ে সোচ্চার ও প্রতিবাদী হয়েছে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে শাসক শ্রেণীকে বাধ্য করেছে তাদের প্রাপ্য অধিকার করতে। ফলে শাসক শ্রেণী ও জনগণের মাঝে সম্পাদিত হয়েছে বিভিন্ন চুক্তি ও দলীল, যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষিত হয়েছে মানুষের অধিকার। ১১৮৮ খ্রিস্টাব্দে আইবেরিয়ান-ব-দ্বীপে সামন্ত প্রভু ও অভিজাত ব্যক্তিদের এক সভায় রাজা আলফসনের নিকট থেকে অভিজাত শ্রেণী ব্যক্তি স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, জীবনের মর্যাদা, বাসস্থান ও সম্পদের অলংঘনীয়তা প্রভৃতি কিছু অধিকার আদায় করে নেয়। “প্রাগুক্ত”। হাঙ্গেরীর রাজা দ্বিতীয় এন্ড্রু ১২২২ খ্রিস্টাব্দে ‘স্বর্ণ আদেশ’ দ্বারা ঘোষণা দেন, তিনি আমীর ওমারা ও অভিজাত শ্রেণীর জন্য বেশ কিছু অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ করবেন। তিনি অধিকারসমূহের এক দীর্ঘ তালিকা প্রণয়ন করেন এবং তা কার্যকর করার পদ্ধতিও ঘোষণা করেন। “প্রাগুক্ত”।
ইংল্যান্ডে মানবাধিকার বিকাশের ক্ষেত্রে ১২১৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা জন কর্তৃক সম্পাদিত গধমহধ ঈধৎঃধ কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলীল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রাথমিকভাবে এই চুক্তি রাজা ও ব্যারনদের মাঝে সম্পাদিত হলেও ৬৩টি অনুচ্ছেদ সম্বলিত এই দলীলকে পরবর্তীতে ঈযধৎঃবৎ ড়ভ ঊহমষরংয খরনবৎঃরবং এবং বর্তমানে মানবাধিকার ও মুক্ত সরকারের ইতিহাসে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। “ইধৎর, উৎ. গ. ঊৎংযধফঁষ, ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়হপবৎহ ভড়ৎ ঃযব চৎড়সড়ঃরড়হ ধহফ চৎড়ঃবপঃরড়হ ড়ভ ঐঁসধহ জরমযঃং, উযধশধ : উযধশ টহরাবৎংরঃু ঝঃঁফরবং চধৎঃ ঋ, ঠঙখ ওও (র) চ- ২১” সপ্তদশ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা কর্তৃক নাগরিকদের সনাতন অধিকার খর্ব করার প্রতিবাদে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয় তারই ফলশ্র“তিতে প্রণীত হয় ১৬২৮ সালে ঞযব চবঃরঃরড়হ ড়ভ জরমযঃং ও ১৬৮৯ ঞযব ইরষষ ড়ভ জরমযঃং নামক দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলীল। মানবাধিকার সম্বলিত এ দু’টি দলীল একদিকে যেমন রাজার একচ্ছত্র আধিপত্য ও ক্ষমতাকে খর্ব করেছে, অপরদিকে পার্লামেন্ট ও আদালতের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে এই প্রতিষ্ঠানকে আরো শক্তিশালী করা হয়েছে। খড়ৎফ ঈযধঃযধহ উক্ত গধমহধ ঈধৎঃধ, ঞযব চরঃরঃরড়হ ড়ভ জরমযঃং ঞযব ইরষষ ড়ভ জরমযঃং এই তিনটি দলীলকে ঞযব ইরনষব ড়ভ ঃযব ঊহমষরংয ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ নামে অভিহিত করেছেন। “রেবা মন্ডল, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬-৭”। ১৮শ শতকের বিভিন্ন দার্শনিকের লেখা ও রচনায় এবং ১৬৮৮ সালের ইংলিশ বিপ্লব ও এর ফসল ১৬৮৯ সালের ঞযব ইরষষ ড়ভ জরমযঃং উত্তর আমেরিকা ও ফ্রান্সে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে প্রেরণা যোগাতে প্রভূতভাবে সাহায্য করে। ব্রিটিশ কলোনী আমেরিকায় ব্রিটিশ রাজার শাসন-শোষণ ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমেরিকানদের জয় লাভের ফলে আমেরিকাবাসী ১৭৭৬ সালের ১২ জুন ভার্জিনিয়াতে একটি ইরষষ ড়ভ জরমযঃং গ্রহণ করে, যার ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়; “অষষ সবহ ধৎব নু হধঃঁৎব ভঁষষু ভৎবব ধহফ ওহফবঢ়বহবহঃ, ধহফ যধাব পবৎঃধরহ ওহযবৎবহঃ ৎরমযঃং, হধসবষু, ঃযব বহলড়ুসবহঃ ড়ভ ষরভব ধহফ ষরনবৎঃু, রিষষ ঃযব সবধহং ড়ভ ধপয়ঁরৎরহম ধহফ ঢ়ড়ংংবংংরহম ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু ধহফ ড়নঃধরহহরহম যধঢ়ঢ়রহবংং.” ২৫ এর মাত্র ২১ দিন পর ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই জর্জ ওয়াশিংটন আমেরিকার ১৩টি কলোনীকে নিয়ে ঞযব উবপষধৎৎধঃরড়হ ড়ভ রহফবঢ়বহফবহপব তথা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণাপত্রের মুখবন্ধে মানবাধিকার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়Ñ “ডব যড়ষফ ঃযবংব ঃৎঁঃযং ঃড় নব ংবষভ-বারফবহঃ, ঃযধঃ ধষষ সবহ ধৎব পৎবধঃবফ বয়ঁধষ, ঃযধঃ ঃযবু ধৎব বহফড়বিফ নু ঃযবরৎ ঈৎবধঃড়ৎ রিঃয পবৎঃধরহ রহ ধষরবহধনষব ৎরমযঃং, ঃযধঃ ধসড়হম ঃযবংব ৎরমযঃং ধৎব ষরভব, ষরনবৎঃু ধহফ ঢ়ঁৎংঁরঃ ড়ভ যধঢ়ঢ়রহবংং.” এতে আরো বলা হয়, এই সব অধিকারের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য জনগণ যে সরকার তৈরি করে সেই সরকার যদি এই সব অধিকার খর্ব করে তবে সেই সরকার উৎখাত করে নতুন সরকার গঠন করা জনগণেরই অধিকার। “ইধৎর, উৎ. গ. ঊৎংযধফঁষ, ওনরফ, চ-২২,” । (অসমাপ্ত)