তারেক আর বাংলাদেশের নাগরিক নন – আইনমন্ত্রী

51

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশি পাসপোর্ট সমর্পণ করে করে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আর নাগরিকত্ব ধরে রাখতে চাইছেন না বলে দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও।
পাসপোর্টের সঙ্গে নাগরিকত্বের সম্পর্ক নেই পাসপোর্ট অধিপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ রেজওয়ানের এমন ব্যাখ্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন- পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকার তারেক রহমানকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
আনিসুল হক বলেন, ‘উনি (তারেক রহমান) যদি বলে থাকেন আমি পাসপোর্ট সারেন্ডার করে দিলাম, আমি থাকতে চাই না- এর মানেটা কী? আমি বাংলাদেশি পাসপোর্ট রাখতে চাই না, তাহলে এখানে তার আইডেন্টিটিটা কী?’
‘যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি (তারেক রহমান) বাংলাদেশের পাসপোর্টে ছিলেন ততক্ষণ পর্যন্ত তার আইডেন্টিটি ছিল বাংলাদেশের একজন নাগরিক। যেখানে তিনি স্বেচ্ছায় বলছেন, আমি আমার বাংলাদেশি পাসপোর্টটা সারেন্ডার করে দিলাম। যখন তিনি ট্রাভেল ডকুমেন্টটা (পাসপোর্ট) সারেন্ডার করে দেন, তখন কি বলা যাবে তিনি তখনও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব রেখে দিয়েছেন?’
তার মানে কি আমরা বলতে পারি কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে তিনি আর বাংলাদেশের নাগরিক নন?- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক তো নয়ই, উনি (তারেক রহমান) পাসপোর্ট ইয়ে (সারেন্ডার) করে দিয়েছেন।’
‘পাসপোর্ট সারেন্ডার করার পর তিনি যখন বিদেশে গেছেন, তখন ব্রিটিশ সরকারের একটা ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে গেছেন। এর মানে এই নয়কি যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সারেন্ডার করেছেন? অফকোর্স (অবশ্যই)।’
পাসপোর্টের সঙ্গে নাগরিকত্বের সম্পর্ক জানতে চাইছে আনিসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে থাকলে আপনার যদি পাসপোর্ট না থাকে তবে কিন্তু নাগরিকত্ব এফেক্টেড হয় না। পাসপোর্ট জিনিসটা কি, এটা একটা ট্রাভেল ডকুমেন্টের মতো, বাইরে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়। বাইরে গেলে আপনি যে বাংলাদেশের নাগরিক সেটার আইডেন্টিটি।’
‘আমি যতটুকু তথ্য জানি, যে বিতর্ক হচ্ছে এর থেকে আমি যে তথ্য জানতে পেরেছি তা হচ্ছে- একজন পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসাসি তারেক রহমান। তিনি ইউনাইটেড কিংডমে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য তার পাসপোর্ট সারেন্ডার করেছেন। এর মানে তিনি বলেছেন আপাতত আমি বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে চাই না। আমি এই পাসপোর্টটা সারেন্ডার করলাম, আপনারা আমাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তার (তারেক রহমান) স্ট্যাটাস হচ্ছে তিনি ব্রিটেনের রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। ইউনাইটেড কিংডম আশ্রয় দিয়েছে কি-না সে বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। যদি দিয়ে থাকে ভালো কথা, না দিয়ে থাকলে তা আমি জানি না। তিনি চেয়েছেন। এই মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ডিনাই (প্রত্যাখ্যান) করেছেন। কিন্তু তার মানে এই না ভবিষ্যতে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হতে চাইলে পারবেন না। এটা তো নয়।’
তারেককে ফেরানো যাবে : প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরে তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দুইবার কথা বলেছেন। জানান, যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে তার কথা হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বন্দী বিনিময় মুক্তি নেই। তাহলে তাকে সরকার কীভাবে তাকে ফিরিয়ে আনবে- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে অপরাধ করেছেন, তখন তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। এটা ঠিক যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের এক্সট্রাডিশন ট্রিটি (বন্দী বিনিময় চুক্তি) নেই। কিন্তু এক্সট্রাডিশন ট্রিটি করতে কিন্তু কোন বাধা নেই। আমরা সেই রকম আলাপ-আলোচনাও করছি।’