বিয়ানীবাজারে হামলার ঘটনায় যুবক আটক

43

বিয়ানীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মাহা বিয়ানীবাজার উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফাইনাল খেলা দেখতে আসা সিএনজি চালক সাকেরকে হামলা করে ছাদ থেকে ফেলে আহত করার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন কে আটক করেছে পুলিশ। আটক যুবকের নাম জিয়া উদ্দিন। সে পৌরসভার কসবা ছালিকোনা গ্রামের তরমুজ আলীর পুত্র। লাইব্রেরীর পাশে জিয়া উদ্দিনের পানের দোকান রয়েছে। সে লাইব্রেরীর কেয়ারটেকারের দায়িত্ব ও পালন করে। তার কাছে লাইব্রেরীর চাবি রয়েছে। লাইব্রেরীর ছাদে শাকেরের উপর হামলা এবং ছাদ থেকে ফেলার মূল ঘটনা জানতে পুলিশ গতকাল তাকে গ্রেফতার করেছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি (তদন্ত) জাগিদ হোসেন তার দোকান থেকে আটজ করে নিয়ে আসেন। বর্তমানে সে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি শাহজালাল মুন্সি বলেন, ঘটনাস্থলের পাশে তার পানের দোকান রয়েছে। গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর চাবি ও তার নিকট থাকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে মূল ঘটনা জানা যাবে।
উল্লেখ্য, মাহা-বিয়ানীবাজার উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর ছাদে বসে দেখেছিলো সাকের। অন্য অনেকের সাথে সে খেলা দেখলেও এ খেলা দেখাই কাল হলো। সাকেরকে খেলা শেষে নামার পথে হামলা করলো তিন যুবক। অজ্ঞান হয়ে দু’তলা থেকে মাটিতে পড়ে মারাত্মক আহত হয়েছে। এখন জীবন মৃত্যু মাঝখানে দাঁড়িয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছেলেটি।
মা-বাবা একমাত্র সন্তান সাকের তিন বোনের একমাত্র ভাই। তার এ অবস্থায় দরিদ্র পরিবারে বইছে ক্ষোভ, অভিমান, হতাশা। পরিবারের সদস্যরা হামলাকারিদের বিচার চান। এ ঘটনার সাথে নেপথ্যে থাকাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
সাকেরের সাথে খেলা দেখা তিন দর্শক হামলাকারিদের পরিচয় সনাক্ত করেছেন পুলিশ। তারা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক জিয়াউর রহমান, আবু আহমদ সাহেদ এর রিক্সা চালক রাজু এবং গোলাবিয়া লাইব্রেরীর প্রহরি দশরথ ঋষি। রাজুর বাড়ি নেত্রকোনা এবং দশরথ ঋষির বাড়ি মাধবপুরে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক জিয়ার বাড়ি পৌরসভার চালিকোনায়। তার কাছে গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরী চাবি রাখা থাকে।
ছাদে বসা দর্শকদের সাথে এ তিনজন বাকবিতণ্ডার পর নিচে নেমে এসে আবার উপরে যায়। তখন খেলা শেষে দু’তলায় সাকেরকে পেয়ে তারা হামলা চালায়।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবীতে জেলা ছাত্রলীগ নেতা আমান উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাকেরের উপর এ হামলার পেছনে দায়িত্বশীল কারো নির্দেশ রয়েছে। আমরা জড়িতদের সাথে নির্দেশ দাতাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন তারেক বলেন, আমরা শুনেছি আবু আহমদ সাহেদ নামের একজনের নির্দেশে সাকেরের উপর হামলা করা হয়। ওই ব্যক্তি এ সময় লাইব্রেরীতে বসা ছিলেন।
শ্রমিক নেতা আলতাফ হোসেন বলেন, আমাদের সিএনজি চালকের উপর যারা হামলা করেছে, এ হামলার পেছনের যাদের ইন্ধন রয়েছে আমরা সবার বিচার চাই। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করবে।
এদিকে সাকেরের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল তাকে ঢাকা পাঠানোর কথা থাকলেও প্রয়োজনীয় এ্যাম্বুল্যান্সের কারণে পাঠানো হয়নি। আজ শনিবার তাকে ঢাকা প্রেরণ করা হবে। তাকে সিলেট ওসমানি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
এদিকে সাকেরের পরিবার থেকে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। মামলায় হুকুম দাতাসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের আসামী করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিহাব উদ্দিন বলেন, মূল ঘটনা আমরা অনেক পরে জেনেছি। ঘটনাটি জেনে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেই। শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আমরা এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে আলোচনা করলে মন্ত্রী ন্যায় বিচারের জন্য আশ্বস্থ করেছেন। তিনি আরোও বলেন, মামলা হবে এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত এবং নেপথ্যে যারা রয়েছেন তারাও আসামী হবেন।