তাহিরপুর শনির হাওরে গ্যাসের কারণে গভীর নলকূপ বসানো যাচ্ছে না

72

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
পানির কারণে জমিন পুকাইয়া যায়গা, ভাবছিলাম ডিপকল বুয়াইয়া জমিনে পানি দিমু কিন্তু গ্যাসের লাইগ্যা হেইডাও অইলনা। তাহিরপুরের স্থানীয় ভাষায় কথা গুলো বলছিলেন মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সুযোগ রায়। তার কথার সুত্র ধরে বুঝা গেল শনির হাওরে তার বোর জমিগুলো পানির অভাবে শুকিয়ে যায়, শুকিয়ে যাওয়া জমিতে ইরি ধান ফলাতে পারেন না। তাই তিনি জমিতে পানি দেয়ার জন্য বিকল্প চিন্তা হিসেবে গভীর নলকূপ বসাতে চেয়েছিলেন কিন্তু প্রাকৃতিক গ্যাসের কারণে তার সেই আশাটাও ক্ষীণ হয়ে গেছে।
সম্প্রতি তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এর সামনে শনির হাওরে গভীর নলকূপ বসানোর সময় মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস বেড়িয়ে আসে নলকূপের পাইপ দিয়ে। মাত্রাতিরিক্ত গ্যাসের কারণে কোন ভাবেই গভীর নলকূপ বসাতে পারেন নি কৃষক সুযোগ রায়। এর আগেও বছর দু’এক পূর্বে একই জমির অপরপ্রান্তে তিনি চেষ্টা করেছিলেন নলকূপ বসাতে কিন্তু সেবারও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন গ্যাসের কারেন। চলতি বছর নলকূপ বসাতে না পেরে তিনি অনেকটা হতাশাগ্রস্ত, তার মতে সেচ বিহীন ইরি জমি মূল্যহীন। আগামী বছর জমি রোপণ করবেন কিনা তাতেও সন্দেহ রয়েছে কৃষক সুযোগ রায় এর।
সরজমিন তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শনির হাওরে কৃষক সুযোগ রায় এর ধানের চারা জমিতে গিয়ে দেখা যায় জমির এক কোনে গভীর নলকূপ স্থাপনের চিহ্ন রয়েছে। খানিকটা গর্তের মধ্যে নাম মাত্র পানি রয়েছে আর সে পানিতে বুদ বুদ করে গ্যাস নির্গত হচ্ছে। বর্ষায় ৬ মাস এ স্থানটি ডুবে যায় হেমন্ত ৬ মাস শুকনো থাকে। ধানের চারা গুলি নিয়ে গেলে স্থানিট উন্মুক্ত প্রান্তরে রূপ নেয় সেই সাথে একবারেই অরক্ষিত হয়ে পরে। অরক্ষিত থাকার কারণে যে কোন সময় ঘটতে পারে অগ্নি দুর্ঘটনাও। এমনটাই আশঙ্কা স্থানীয়দের।
তাহিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামন বলেন, তিনি কৃষকদের কাছে বিষয়টি শুনে সরজমিন হাওরে গিয়ে দেখে আসছেন নলকূপ স্থাপনের স্থান দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস বেড়িয়ে আসছে। তিনি মনে করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এখনই এটির যথাযত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া দরকার।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন, নলকূপ বসানোর স্থান দিয়ে ক্রমাগত ভাবে গ্যাস বের হচ্ছে। বর্তমানে সে স্থানটি উন্মুক্ত রয়েছে, যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কৃষক সুযোগ রায় বলেন, মাটি চাপা দিয়েও গ্যাস বেড়িয়ে আসা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
স্থানীয়দের দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্যোগী হবেন।