বিদ্যুতের মারাত্মক অপচয় ॥ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ ॥ কানাইঘাট জুড়ে চলছে হাজারো নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও রিক্সা

86

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
Tomtom Picকানাইঘাট উপজেলা জুড়ে শত শত নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও রিক্সা অবৈধভাবে চলাচল করছে। আর প্রতিদিন এসব ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও রিক্সার ব্যাটারী চার্জে বিদ্যুতের মারাত্মক অপচয় ঘটছে। অথচ কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এসব ব্যাটারী চালিত যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিদিন কানাইঘাটে ব্যাটারী চালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব অবৈধ যানবাহনের কোন চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অধিকাংশ চালকরা কিশোর বয়সের। যার ফলে প্রাই দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা। সরকারী ভাবে কঠোর নির্দেশ রয়েছে বিদ্যুতের অপচয় রোধে এসব ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও রিক্সার ব্যাটারী চার্জে যাতে করে কেউ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারে এজন্য নির্দেশনা থাকার পরও কানাইঘাট উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে এক ধরনের ব্যবসায়ীরা তাদের মিটার থেকে প্রতিদিন ইজিবাইক প্রতি ১৫০/- টাকা, রিক্সা প্রতি ১০০/- টাকা আদায় করে ব্যাটারী চার্জ দিচ্ছেন। পল্লীবিদ্যুতের অনেক কর্মকর্তাদের চোখের সামনে এরকম বাণিজ্যিক কর্মকান্ড চলার পরও বিদ্যুতের অপচয় রক্ষা করতে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অনেকে এ লাভ জনক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। কানাইঘাট জুড়ে হাজারো ব্যাটারী চালিত যানবাহনে বিদ্যুৎ চার্জের কারণে এলাকায় লোড শেডিং তীব্র আকার ধারন করেছে। জানা যায়, প্রতিটি ব্যাটারী চালিত ইজিবাইকে ১২ বোল্টের ৫টি ব্যাটারী ও রিক্সায় ৪টি ব্যাটারী চার্জ দেওয়া হয়। এসব যানবাহনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় বিদ্যুতের লোড শেডিং বেড়েই চলছে এবং শত শত পরিবার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকরা জানিয়েছেন। উপজেলার সড়কের বাজার, গাছবাড়ী বাজার, রাজাগঞ্জ বাজার, কানাইঘাট বাজার, চতুল বাজার, সুরইঘাট বাজার, বড়বন্দ বাজার, চতুল ঈদগাহ বাজার, মালিগ্রাম বাজার, বাংলা বাজার, ভবানীগঞ্জ বাজার সহ অন্যান্য হাটবাজারে এক ধরনের ব্যবসায়ী তাদের আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে এসব ব্যাটারী চালিত যানবাহনের বিদ্যুৎ দিয়ে লাভ জনক ব্যবসা করছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতের বেলা সড়কের বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জয়পুর হাউজ মার্কেটের মালিক আবুল হারিছ তার মার্কেটের ১০টি মিটারের মাধ্যমে ব্যাটারী চালিত টমটম ও রিক্সায় চার্জ দিচ্ছেন। উক্ত মার্কেটের দু’তলায় কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সড়কের বাজার আঞ্চলিক অফিসের ইনচার্জ তমাল নিজে বাসা নিয়ে থাকেন। তার চোখের সামনে ব্যাটারী চালিত যানবাহনে চার্জ দেয়া হলেও তিনি এব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের কোন কর্মকর্তাকে অবহিত না করে মার্কেটের মালিককে তার ব্যবসায় সহযোগিতা করে আসছেন বলে বাজারের ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল জানিয়েছেন। পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহক ও এলাকার সচেতন মহল জানান কানাইঘাট জুড়ে এমনিতেই ভয়াবহ লোডশেডিং প্রতিদিন হচ্ছে, তার উপর এসব শত শত অবৈধ ব্যাটারী চালিত যানবাহন বিদ্যুতের ব্যাপক অপচয় ঘটলেও পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এ ব্যাপারে কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম নজরুল ইসলাম মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারী চালিত যানবাহনে বাণিজ্যিক ভাবে কোন ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ চার্জ দেওয়ার ঘটনাটি আমার জানা নেই। যারা মিটার থেকে এসব যানবাহনে ব্যাটারী চার্জ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে বিদ্যুতের অপচয় আমরা রোধ করতে পারব। সড়কের বাজারের জয়পুর হাউজ এর মালিক কর্তৃক ব্যাটারী চালিত যানবাহনে বিদ্যুৎ চার্জ কিভাবে দেওয়া হচ্ছে এই ব্যাপারে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তিনি সড়কের বাজার আঞ্চলিক অফিসের ইনচার্জ তমালকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।