সিলেটের মাঠে ফের ‘আফগান লজ্জায়’ ডুবলো বাংলাদেশ!

42

স্পোর্টস ডেস্ক :
সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার এহসানুল হক সেজান আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করার কথাই afgan-20171004190723-600x312বলেছিলেন। তাঁর আশাবাদী উচ্চারণ ছিল, ‘আফগানিস্তানকে তো ৫-০ তে হারানো উচিত।’ কথাটা হয়তো এখন ফিরিয়ে নিতে চাইবেন সেজান। তাঁর দল যে ১-২ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়েছে!
পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ১৪৫ রানের বড় ব্যবধানেই জয় তুলে নিয়েছিলেন সাঈফ হাসানরা। তখন কিন্তু সেজানের কথাই যৌক্তিক বলে মনে হচ্ছিল। পরের ম্যাচটি ভাসিয়ে নিয়ে যায় বৃষ্টি। তৃতীয় ওডিআইয়ে প্রকটভাবে ধরা দিল বাংলাদেশের ব্যাটিং দুরবস্থার চিত্র; মাত্র ৭৫ রানে অলআউট! আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল জয় তুলে নিল পাঁচ উইকেটে।
সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার চিত্র ভুলিয়ে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার ম্যাচ ছিল আজ। কিন্তু এগিয়ে যাওয়া তো দূরাকাশের নক্ষত্র, ফের ব্যাটিং ব্যর্থতায় লজ্জায় যেন ডুবলো বাংলাদেশ!
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বুধবার সকালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে আফগানরা। দলীয় ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। দুই ‘হাসান’ নাঈম ও সাঈফের ঘুর্ণিতে উইকেটে যাওয়া-আসা করতে থাকেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। ৪৫ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে ১৩৩ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী যুব দলটি। তাও নিসার ওয়াহদাত একদিকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে! সাঈফের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৯৩ বলে ৫৩ রানের ধৈর্য্যশীল এক ইনিংস এসেছে নিসারের ব্যাট থেকে। ম্যাচ শেষে এই ইনিংসই পাচ্ছে অসাধারণের মর্যাদা। নিসারের এ ইনিংস ছাড়া যে ম্যাচ জিততে পারতো না আফগানরা!
আফগানদের অলআউট করতে নাঈম ৫টি, সাঈফ ৩টি এবং হাসান মাহমুদের শিকার ছিল ২টি উইকেট।
‘মামুলি লক্ষ্য, নিশ্চিন্তে ব্যাটিং করে ম্যাচ শেষ করে দাও’-এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মামুলি লক্ষ্যকেই এভারেস্টসম বানিয়ে ফেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা! অফ-ব্রেক বোলার মুজিব জাদরানের বোলিং তাণ্ডবে ১১ রানেই ছয় উইকেট হারিয়ে চরম লজ্জার মুখে পড়তে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাঈম হাসান কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলায় সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায় ছোট টাইগাররা। কিন্তু দলীয় ৮৬ রানে তাদের জুটি ভাঙার পর আর দুই রান যোগ করতেই বাকি উইকেটও হাওয়া! ৮৮ রানে অলআউট হয়ে বাংলাদেশ যুবারা ম্যাচ হারলো ৪৫ রানের ব্যবধানে। অঙ্কনের ৪৩ ও নাঈমের ৩০ ছাড়া উল্লেখ করার মতো রান ছিল কারোরই। দলের ছয় ব্যাটসম্যান যখন শুন্য রানে সাজঘরে ফিরেন, তখন উল্লেখ করারইবা কি থাকে!
আফগান যুবা মুজিব জাদরানের কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। কি দারুণ, কি মায়াবী তাঁর বোলিং! শিল্পীর নিপুণ আঁচড়ে যেন টপাটপ শিকার করে চলেন উইকেট! তার বোলিং ফাঁদে আউট হয়েছেন ৭ ব্যাটসম্যান। বাকি তিন উইকেটের দুটি কাইস আহমদের, একটি নাভিনুল হকের।
২-১ এগিয়ে থাকা আফগান যুবারা আগামী শুক্রবার সিরিজের শেষ ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই জয়োল্লাসের সাথে সিরিজ জয়ের উল্লাসও করতে চাইবে। বাংলাদেশের চাওয়া তো একটাই, কোনোভাবে শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা রাখা।