বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতি ॥ সুনামগঞ্জে ৪৭টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে পাউবো

18

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে গাফলতি ও দুর্নীতির কারণে গত বোরো মৌসুমে কৃষকদের কোটি কোটি টাকার ধানের ক্ষতি ও রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে নেতিবাচক হওয়ায় ৪৭ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জরিমানা ও কালো তালিকাভুক্ত করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা যায়, চুক্তি মোতাবেক কেন কাজ করা হলো না এর কারণ দর্শনোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল ৪৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত ৩১ আগষ্ট। এর মধ্যে ৩০ জন গত বুধবার জবাব দিয়েছেন। এই জবাব নিয়ে সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী গত বুধবার ঢাকা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী যাচাই-বাচাই ও পর্যালোচনা করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই ২৮ দিন সময় পাননি চিঠির জবাব দিতে। আইনি জঠিলতা এড়াতে এবং জবাব দিতে তাদের জন্য সময় বাড়িয়েছে পাউবো। সময় শেষ হলে আবারো সব জবাব নিয়ে আলোচনায বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
৪৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জামানত বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও যেসব ঠিকাদার যে পরিমাণ কাজ করেনি সেই পরিমাণ কাজের উপর জরিমানা করা হবে। সেই সাথে তাদের নাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কালো তালিকায় যুক্ত হবে। যাতে করে দেশের কোথাও তারা কোনো দরপত্রে অংশ নিতে না পারে।
জানা যায়, বেশির ভাগেরই ৯০ ভাগ কাজ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। যাদের বাঁধ নির্মাণের কাজ ৩০ শতাংশের নিচে দেখানো হয়েছে সেই সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০টি প্যাকেজের কাজ দেয়া হয়। এই সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জামানত বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো, ঠিকাদার খন্দকার শাহীন আহমেদের সাতটি প্যাকেজ, সঞ্জিব দাসের পাঁচটি প্যাকেজ, মেসার্স নূর ট্রেডিংয়ের একটি, মেসার্স সোয়েব এন্টারপ্রাইজের দুটি প্যাকেজ, মেসার্স এলএন কন্সট্রান্সনের একটি প্যাকেজে, টেকবি ইন্টান্যাশনালের একটি প্যাকেজ, মো. আতিকুর রহমানের একটি প্যাকেজ, মাহিন কনস্ট্রাকসনের একটি প্যাকেজ। তাদের দেয়া জামানত দুই কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৭০৬ টাকা ৭৯ পয়সা বাজেয়াপ্ত করতে চিঠি দিয়েছে পাউবো।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, বিধি মোতাবেক সবকিছুই হচ্ছে। ৪৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৬০টি প্যাকেজে বাঁধ নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশ ও ৩০ শতাংশ করেছে। তাই সবাইকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩০ জন জবাব দিয়েছে। যারা ২৮ দিন সময় পায়নি তাদের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে।
তিনি জানান, সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জামানতের টাকা পাউবোর আঞ্চলিক হিসাব কেন্দ্রে জমা দেবার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে বলা হয়েছে। হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।