বিশ্বনাথে কৃষক হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

36

স্টাফ রিপোর্টার :
বিশ্বনাথে কৃষক অলিউর রহমান জলিল হত্যা মামলায় ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক এ. এম. জুলফিকার হায়াত এ রায় প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে, বিশ^নাথ থানার কালিগঞ্জ বাজার এলাকার কাদিপুর গ্রামের মৃত মজম্মিল আলীর পুত্র সামছুল ইসলাম (৪০), তার ভাই মনিরুল ইসলাম সনির (৩২), একই গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের পুত্র তাজ উদ্দিন (৪৫), তার বড় ভাই বশির উদ্দিন (৫৫), মৃত ইছাক আলীর পুত্র মইনুল ইসলাম (৩৮) ও তার ভাই সেবুল মিয়া (৩০)। রায় ঘোষণার সময় সকল আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ঘটনার কিছুদিন পূর্বে বিশ^নাথ থানার কাদিপুর গ্রামের সুনর আলী পুত্র মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় আসামী সামছুল ইসলাম। এর প্রতিবাদ করে মতিউরের পরিবার ও তার ভাই অলিউর রহমান জলিল (২২)। এ জন্য সম্প্রতি আসামীরা ওই পরিবারের কাউকে খুন খারাবি করার পাঁয়তারা শুরু করে আসছিল। ২০১৪ সালের ২৪ মে সকালে কৃষক অলিউর রহমান জলিল বাড়ির পাশ^বর্তী এলাকায় ধানের হালি উঠাতে তার জমিতে যায়। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সামছুল ইসলামে নেতৃত্বে আসামীরা অস্ত্র-শস্ত্রে সঞ্জিত হয়ে ওই জমিতে গিয়ে অলিউর রহমান জলিলের উপর হামলা চালায়। এ সময় আসামীরা রামদা ও ডেগার দিয়ে অলিউর রহমান জলিলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত অলিউর রহমান জলিলের মাতা নুরেছা বেগম বাদি হয়ে সামছুল ইসলামসহ ওই ৬ জনের বিরুদ্ধে বিশ^নাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নং- ১১ (২৪-০৫-১২)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২৫ অক্টোবর বিশ^নাথ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ সাব্বির রহমান ৬ জনকে অভিযুক্ত আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৩ সালের ১৯ মে থেকে এ মামলার বিচারকার্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানী ও ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী সামছুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম সনির, তাজ উদ্দিন, বশির উদ্দিন, মইনুল ইসলাম ও সেবুল মিয়াকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে উল্লেখিত দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট মো: ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে এডভোকেট মইনুল ইসলাম, এডভোকেট আব্দুল করিম আববরী এবং এডভোকেট আতিকুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।