বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
বড়লেখায় পিএসসির দক্ষিণভাগ হাইস্কুল কেন্দ্রের সচিব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীর সিট পরিবর্তন ও পরীক্ষায় প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন কক্ষ পরিদর্শক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। গতকাল মঙ্গলবার পিএসসির দ্বিতীয় দিনের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর পূর্বে একটি কেজি স্কুলের পরীক্ষার্থীদের সিট পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষার্থীদের পূর্বের সিট বহাল রাখায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রভাব বিস্তারকারী কেন্দ্র সচিবকে পরীক্ষা চলাকালীন কক্ষ পরিদর্শনে নিষেধ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও বরাবরে প্রেরিত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন এলাকার (আংশিক) প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার শিক্ষার্থীরা এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পূর্ব নির্ধারিত আসনে বসে রবিবার ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা দিতে গিয়ে মেরিট কেয়ার একাডেমির পরীক্ষার্থীরা আগের দিনের বসা সিটে অন্য স্কুলের পরীক্ষার্থীর সিট নম্বর দেখে কান্নাকাটি শুরু করে। বাহিরে অপেক্ষারত অভিভাবকরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কেন্দ্র সচিব তাদের সিট পরিবর্তন করে অন্য হলে নিয়ে গেছেন। এ নিয়ে সাধারন শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্র অভিভাবক সমছ উদ্দিন, আব্দুস সহিদ, কামরুন নাহার, শ্যামল দেব, সুজিত চন্দ, আব্দুল মুহিত, শিক্ষক ও অভিভাবক আপ্তাব আলী, জুনেদ আহমদ, অনিলা শর্মা প্রমুখ অভিযোগ করেন মেরিট কেয়ার একাডেমির সাথে ব্যক্তিগত আক্রোশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব শাহীদুল ইসলাম উদ্দেশ্যমূলক পরীক্ষার্থীদের সিট পরিবর্তন করেন। কেন্দ্র সচিবের ব্যক্তিগত কেজি স্কুলের পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা দিতে তিনি প্রতি বছর পরীক্ষা হলে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করেন। এছাড়া নিজের ছেলে-মেয়ে পরীক্ষার্থী থাকা স্বত্ত্বেও গত ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তিনি তথ্য গোপন রেখে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারী প্রধান শিক্ষক জগদিশ চন্দ্র পাল, শিক্ষিকা আমিরুন নেছা খানম অভিযোগ করেন কেন্দ্র সচিব শাহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একাধিক ফৌজদারী মামলা বিচারাধীন এবং একটি মামলায় হাজত বাস থাকা স্বত্ত্বেও তিনি কিভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এ স্কুলে পিএসসির কেন্দ্র চালুর পর থেকেই তিনি প্রাইমারী শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করছেন। তারা এ কেন্দ্র সচিবের প্রত্যাহার দাবী করেন।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শারমিন সুলতানা কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীর সিট পরিবর্তন ও প্রভাব বিস্তারের লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, সিট পরিবর্তন করলেও আগের সিটে বসিয়েই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালিন কেন্দ্র সচিব শাহীদুল ইসলামকে পরীক্ষা হলে প্রভাব বিস্তার না করতে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার অরবিন্দ কর্মকার জানান, কেন্দ্র সচিবের নানা স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অনেক শিক্ষক ও অভিভাবক এ স্কুল থেকে পিএসসির কেন্দ্র স্থানান্তরের দাবী জানিয়েছেন।