সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ বনলতা গৃহ নির্মাণ সমিতির আড়ালে ভূমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ

28
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগরীর মাছিমপুর এলাকার বাসিন্দা সাহেদ আহমদ।

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট নগরের মাছিমপুরে সরকারি অধিগ্রহণের কারণে পূর্ববর্তী মালিকরা জমি হারিয়ে যেখানে ভূমিহীন হয়েছেন, সেই ভূমিরই পতিত পড়ে থাকা অংশের কাগজপত্র তামাদি করে বনলতা গৃহ নির্মাণ সমবায় সমিতি নামের একটি ভূমিখেকো চক্রকে প্রদানের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন মাছিমপুরের মরহুম বশির মিয়ার ছেলে সাহেদ আহমদ।
তিনি দাবি করেন, সাদিপুর দ্বিতীয় খন্ড মৌজায় তাদের মৌরশী বসতভিটা বিভিন্ন সময়ে সরকার অধিগ্রহণ করে। পরবর্তীতে এসব জমির বেশিরভাগই পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। এজন্য তারা জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার আবেদন করেও পাননি। শুধু তাই নয়, তারা অধিগ্রহণকৃত জমির ষোলআনা ক্ষতিপূরণও পাননি।’
লিখিত বক্তব্যে সাহেদ বলেন, ‘তারা জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন ফলাফল পাননি। পরে হাইকোর্টে যান, হাইকোর্ট তাদের পক্ষে আদেশ দিলেও এ আদেশের বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মূলত, বনলতা গৃহ নির্মাণ সমবায় সমিতির নামে ভূয়া একটি ভূমিখেকো চক্র দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে ভুল বুঝিয়ে তাদের মৌরশী সম্পত্তি গিলে খাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে, আর এ কারণে তারা ন্যায্য পাওনা জমি বন্দোবস্ত পাচ্ছেন না।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯১২-১৩ ইং সালের এলএ কেইছমূলে তাদের কৃষি জমি সরকার অধিগ্রহণ করার পর মাত্র দুই তিন বছর ব্যবহার করার পর ফেলে রেখে দেয়। বর্তমানে জমিগুলো পতিত অবস্থায় আছে। একই ভাবে শাহজালাল সেতু নির্মাণের জন্য ১৯৮১-৮২ সালেও তাদের বসতভিটা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেই জমির অর্ধেক এখনও পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তখন থেকেই ভূমিহীন-গৃহহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। তাদের নিজস্ব জমি-জমা থাকার পরেও ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তারা কয়েক দফায় ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি আনার পরও তাদের জমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়নি। এছাড়া পূর্বতন মালিক হিসেবে ৮ পরিবারকে ওই এলাকায় ০.১৬ একর করে জমি প্রদান করা হয়েছে। কিন্ত এখনও তাদের আবেদনের বিষয়ের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উল্টো প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে বনলতা গৃহ নির্মাণ সমবায় সমিতি জমি নিয়ে যাওয়ার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
বনলতা সমবায় সমিতিকে ভূয়া এবং ভূমি দস্যুদের জমি-জমা আত্মসাতের একটি প্লাটফর্ম উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘ বনলতা গৃহ নির্মাণ সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান সোহেল কাদের চৌধুরী সমিতির আড়ালে এ জমি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ভূমিখেকোরা একসাথে সেখানকার দশবিঘা জমি কৌশলে তাদের নামে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ আমাদের জমি দুই দুইবার অধিগ্রহণ করেছে সরকার। কিন্তু একবারও একটুকরো জমি আমাদেরকে ফেরত দেয়নি এটাই আমাদের জীবনের বড় দুঃখ।’ তিনি জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি ভূমিখেকো চক্রের কবল থেকে সকল দপ্তরকে সতর্ক থাকারও অনুরোধ করেছেন।