স্কুলছাত্র সাঈদ হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দিনে মা, মামা ও ওসি সহ ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

38

স্টাফ রিপোর্টার :
আবু সাঈদ নিখোঁজ হওয়ার পর ছেলেকে না পেয়ে এয়ারপোর্ট থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করি। এর পর খবর পাই এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনষ্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। এবাদুরের দেখানো মতে কুমারপাড়াস্থ ঝর্ণারপাড় সবুজ-৩৭ নং বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। আমার এ নিরপরাধ স্কুল পড়–য়া ছেলেকে টাকার লোভে যে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি করেছে আমি এই ৪ আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবী জানাচ্ছি। নিহত আবু সাঈদের মা সালেহা বেগম গতকাল রবিবার কান্নাজনিত কন্ঠে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এভাবে বর্ণনা দিয়ে সাক্ষ্য দেন।
গতকাল সালেহা বেগম ছাড়া অন্য ৫ সাক্ষীরা হচ্ছেন- সাঈদের আরেক মামা জয়নাল আবেদীন, তার শ্যালক সৈয়দ হিলাল, এয়ারপোর্ট থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) গৌছুল হোসেন, এসআই সমরাজ মিয়া ও কনষ্টেবল কাশেম। গতকাল সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত ৪ আসামীর উপস্থিতিতে আদালতের বিচারক মোঃ আব্দুর রশিদ তাদের এ সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করেন।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর একই আদালতে সাক্ষ্য দেন- সাঈদের পিতা মতিন মিয়া, তার মামা আশরাফুজ্জামান, প্রতিবেশী ফিরোজ আহমদ, ওলিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম। এ নিয়ে এই আলোচিত মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ আদালতে গৃহিত হয়েছে। আজ সোমবার ফের সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার হরতালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পুলিশ এ মামলায় অভিযুক্ত এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ কনস্টেবল (বরখাস্ত) এবাদুর রহমান পুতুল, র‌্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিব হোসেন মাসুমকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাদের উপস্থিতিতে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত মঙ্গলবার ওই আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ, মুক্তিপণ, সহযোগিতা ও হত্যার অভিযোগ এনে উল্লেখিত জনকে এ মামলায় অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করা হয়। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৩৭ জন রয়েছেন।
সূত্র জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সিলেট মহানগর হাকিম ১ম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। মামলাটি তদন্ত করেন কোতোয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন। ওই অভিযোগপত্রে এই ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ৭ অক্টোবর অভিযোগপত্রের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ অক্টোবর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন এবং ৮ নভেম্বর এই আদালত মাছুমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ও মালামাল ক্রোকের আদেশ দেন। আদেশের একদিনের মাথায় পলাতক আসামী মাছুম ৯ নভেম্বর সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এরপর  চার্জগঠনের কয়েকটি তারিখ পরিবর্তন হয়।