স্টাফ রিপোর্টার
জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৃথকভাবে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ২ জন খুন হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জুড়িতে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা ও ওইদিন রাতে চুনারুঘাটে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুনের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার রাজকি চা-বাগানে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শুদ্র ভ‚ঁইয়া (৪০) রাজকি চা-বাগানের ২১ নম্বর লাইনের বাসিন্দা। হত্যাকাÐের ঘটনায় ওইদিন রাতে জুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয়জিৎ চাষা (২৫) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজকি চা-বাগানের কিছু জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা চা-শ্রমিক সুরেশ চাষার সঙ্গে প্রতিবেশী শুদ্র ভ‚ঁইয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। সুরেশের লোকজন ওই জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুরেশের লোকজন পাকা ধান কাটতে যান। এ সময় শুদ্র তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে শুদ্রের আঘাতে সুরেশের আত্মীয় জয়জিৎ চাষা আহত হন। পরে ওই পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার (শুদ্র) ওপর হামলা চালান। এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় শুদ্রের দুই হাত, পা ও ঘাড়ের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপ দেখা যায়। রাত ৯ টার দিকে নিহত শুদ্রের স্ত্রী মণি ভ‚ঁইয়া বাদী হয়ে সুরেশ বুনারজি, জয়জিৎ চাষাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম ভ‚ঁইয়া শুক্রবার সকালে জানান, জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে এ হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের জন্য শুদ্রের লাশ মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি জয়জিৎকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন হয়েছেন। উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের হাপ্টার হাওর (সাদ্দাম বাজার) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম- মো. রাজু মিয়া (৫৫)। তিনি একই গ্রামের মৃত বাহার উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় সাদ্দাম বাজারে সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, নিহত মো. রাজু মিয়ার সাথে তার ভাই মৃত তোতা মিয়ার ছেলে মোঃ হাছান মিয়া, হোসেন মিয়া ও মুক্তার মিয়াদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। চাচা-ভাতিজার বাড়ির জায়গা বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ এলাকার মুরব্বীদের উপস্থিতিতে মিমাংসার জন্য শালিশ বৈঠক হয়। কিন্তুবিরোধ মিমাংসা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে বিরোধীয় স্থানে ছোট একটি জাম্বুরা গাছ কাটা নিয়ে চাচা ভাতিজার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ভাতিজাদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে চাচা রাজু মিয়া গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন। স্বজনরা তাৎক্ষণিক রাজুকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে ওইদিন বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজু মিয়া মারা যান।
খবর পেয়ে বিকেলে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল উপরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।