জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই প্রথম মরমী কবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থ এর শততম মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে। গতকাল রবিবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। উদ্বোধন শেষে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, মরমী গানের জন্য বিখ্যাত ভাটির দেশ সুনামগঞ্জ। এ অঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেছেন মরমী কবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থ, হাছনরাজা ও বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম। তারা যুগযুগ ধরে গান ও কবিতা লিখে বিখ্যাত হয়েছেন। আর দেশের সংস্কৃতিকে করেছেন সমৃদ্ধ। এসব মহান গুণী ব্যক্তিদের দেখানো পথে আমাদেরকে চলতে হবে। তাই এসব গুণী ব্যক্তিদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকারি উদ্যোগে তাদের নামে যারযার নিজস্ব এলাকায় পৃথকভাবে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে আমরা ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল গুণীজনকে স্মরণ করছি। এখন থেকে প্রতি বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট শাহানা রাব্বানী এমপি, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, তথ্য সচিব মর্তুজা আহমদ ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেবজিৎ সিংহ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদ। অনুষ্ঠান শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা বদরুল ইসলাম ও গীতা পাঠ করেন ধীরেন্দ্র সূত্রধর। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল রাধারমণের ধামাইল গান। সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির নারী শিল্পী দল ধামাইল গান পরিবেশন করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ৩ টি বইয়ের মোরক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
পরে আবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জেলা সংস্কৃতি কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জিল হক চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আকমল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, জেলা জাসদ সভাপতি আতম সালেহ আহমদ, মরমী কবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থ এর ছেলে নিশিকান্ত দত্ত পুরকায়স্থ, কণ্ঠশিল্পী বিশ্বজিৎ রায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীনুল ইসলাম বাবুল, শিক্ষক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
পৃথক অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজেরা বারী, জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান, পাটলি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আরশ মিয়া, রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মজলুল হক, আশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ূব খান, পাইলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাইয়ূম মশাহিদ, মতিউর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইকবাল হোসেন ভূইয়া, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন লালন, পৌর যুবলীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান সৈয়দ জিতু মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী স্বরণ, সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা মামুন আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি শাহ শাহেদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন জুয়েল, যুগ্ম-সম্পাদক রুমেন আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমদ, ছাত্রলীগ নেতা সাফরোজ ইসলাম মুন্না, আব্দুল মুকিত, মল্লিক মনসুর, জিন্নাহ আহমদ, রাশিদ আহমদ চৌধুরী মুরাদ, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সায়েক আহমদ, সাধারণ সম্পাদক হাছিনুর রশীদ ভূঁইয়া, জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান মিয়া, যুগ্ম-সম্পাদক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া, সংবাদকর্মী আলী আছগর ইমন, এমডি মুন্নাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার জনতা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় পর্বে রাধারমণ উৎসবে অতিথি ও স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।