স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর আম্বরখানার এলাকার হাউজিং এস্টেটে গড়ে উঠা চাঁেদর হাসি নামের কথিত ক্লিনিকের ঘটনায় আটক ৩ প্রতারককে ৫৪ ধারায় কারাগারের মাধ্যমে জেলে প্রেরণ করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছে- নগরীর মেজরটিলা কুসুমবাগ ১৯ নং বাসার মৃত তফর উদ্দিনের পুত্র হুমায়ুন কবির লিমন (৪৪), হবিহঞ্জের বানিয়াচং থানার গুনই গ্রামের মৃত মাওঃ মর্তুজা খানের পুত্র বর্তমানে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিশ্বনাথ জোনাল অফিসে কর্মরত মাওঃ সাজ্জাদুর রহমান খান (৪৬) ও কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার সহিলা গ্রামের মৃত বাবর আলী আকন্দের পুত্র বর্তমানে বিশ্বনাথ জানাইয়া রোডের বাসিন্দা ডাঃ হাদিছ আকন্দ (৪২)। গত বুধবার রাতে পুলিশ পুলিশ ওই ৩ জনকে কথিত চাঁদের হাসি ক্লিনিক থেকে আটক করে।
এয়ারপোর্ট থানার ৫৫০/৫৫৮ নং জিডি মুলে ৫৪ ধারায় গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ আটককৃতদের আদালতে হাজির করে। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা গ্রামের মৃত আব্দুল আলীর পুত্র দিলাল আহমদ বাদি হয়ে মোট ১০ জনকে আসামী করে এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নং-১০ (১৫-০৪-১৫)। ধারা-৪০৬/৪১৯/৪২০ দঃবিঃ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অস্ট্রোলিয়ান সরকারের ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অসংখ্য লোক। রেশ এর প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যান ডাক্তার জুবায়ের পুষ্টি প্রকল্পের ৫০০ জন মাঠ কর্মী নিয়োগ দেন। শর্ত অনুযায়ী প্রতিটি পরিবারকে ২০০ টাকা মূল্য দিয়ে একটি কার্ড কিনতে হয়। আর প্রতিজন মাঠ কর্মীকে দেয়া হয় ৫০০টি করে কার্ড। সে হিসাবে তাদের কাছ থেকে পুষ্টি সামগ্রী বিতরণের নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ গ্রাম আদালতের এজলাস নির্মাণ নামের একটি প্রকল্পে নিয়োগের নামে ২০০ জনের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা করে ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন ডা. জুবায়ের। গত বুধবার দুপুরে প্রতারিত মাঠ কর্মী ও চাকুরী বাণিজ্যের ভুক্তভোগিরা ক্লিনিকে এসে তালা দিলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে যান। এ সময় স্থানীয় কাউন্সিলর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী উপস্থিত হয়ে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে চান। প্রকল্প ম্যানেজার হুমায়ুন কবির কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপর এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সেখানে যায়। এ এসআই বোরহান উদ্দিন জানান, ৫ মহিলা কর্মকর্তাসহ ২ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। তবে মহিলা কর্মকর্তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এয়ারপোর্ট থানার এএসআই মোঃ বোরহান উদ্দিন জানান, মামলাটি দুদক আইনের তফশীলভুক্ত মামলা হওয়ার কারণে তদন্তের জন্য সিলেট বিভাগীয় অঞ্চলের দুনীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালকের কাছে এফআইআর কপি প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আসামীগণ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র, তারা ভুয়া প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন লোককে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে আপাতত অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কারণে ফৌদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।