মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরী
আজ ১০ মার্চ টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে লংমার্চ এর দশম বার্ষিকী। ২০০৫ সালের ৯ ও ১০ মার্চ ’ভারতীয় নদী আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির ব্যানারে মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের নেতৃত্বে রাজধানীর মুক্তাঙ্গন থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ অভিমুখে ঐতিহাসিক লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করতে চায়। দু‘দেশের বিশাল জনগোষ্ঠির প্রবল আপত্তি, আন্দোলন, প্রতিবাদ ও প্রচন্ড ক্ষোভকে পাত্তা না দিয়েই ভারত একতরফা ভাবে সুরমা কুশিয়ারার উৎস মুখ বরাক নদীতে টিপাইমুখ ড্যাম নির্মাণে চূড়ান্ত আয়োজন সম্পন্ন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টিপাইমুখে বাঁধ নির্মিত হলে ২০৫০ সালে বৃহত্তর সিলেট মরুভূমি হয়ে যাবে। হুমকির মুখে পড়বে ভাটি এলাকার আড়াইকোটি মানুষের জীবনযাত্রা। পাল্টে যাবে নদীমাতৃক বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য। বিশেষজ্ঞদের মতে এই বাঁধ সর্বনাশা আরেক ফারাক্কার ন্যায় অভিশপ্ত মরণফাঁদ! তাদের মতে টিপাইমুখে বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন মারাত্মক হ্রাস পাবে’। সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে এই বাঁধ নির্মাণের ফলে ৩৫০কিলোমিটার দীর্ঘ সুরমাও ১১১ কিলোমিটার দীর্ঘ কুশিয়ারার নাব্যতা হারিয়ে যাবে।
ভারত শুকনো মওসুমে পানি আটকিয়ে এবং বর্ষায় পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে মারতে চায়। ভারতের ফারাক্কা বাঁধ যখন বাংলাদেশের মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তখন মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭৬ সালে লংমার্চ করেন ফারাক্কা অভিমুখে। তাঁর লংমার্চের উদ্দেশ্য ছিলÑ প্রথমত, ফারাক্কা বাঁধের ফলে ভাঁটির দেশ বাংলাদেশের সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রতিবাদ করা। দ্বিতীয়ত, ফারাক্কার ভয়াবহ প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সচেতন ও সংগঠিত করা। তৃতীয়ত, “ভারতের পানি আগ্রাসন”-এর ব্যাপারে বিশ্ব জনমতকে আকৃষ্ট করা। ফারাক্কা আর টিপাই বাঁধের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। উভয় কারণেই বাংলাদেশের অস্তিত্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাই ফারাক্কার বিরুদ্ধে মাওলানা ভাসানীর লংমার্চের পর ঐতিহাসিকভাবেই টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে আরেকটি লংমার্চ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। ২০০৫ সালে রাজধাণীর মুক্তাঙ্গন থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ অভিমুখে লংমার্চ করে এই ঐতিহাসিক দায়িত্বটি পালন করলেন মাওলানা মুহিউদ্দীন খান। সেদিন মাওলানা খানের ডাকে প্রবাসীদের একটি কাফেলা সহ দেশের প্রায় ৩০টি ছোট বড় সংগঠন টিপাইমুখ অভিমুখের লংমার্চে যোগদান করেছিল। টিপাইমুখ বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা ব্যক্ত করে সেদিন বলা হয়েছিল: সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে এই বাঁধ নির্মাণের ফলে ৩৫০কিলোমিটার দীর্ঘ সুরমাও ১১১ কিলোমিটার দীর্ঘ কুশিয়ারার নাব্যতা হারিয়ে যাবে, মরুময় হবে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বিশাল এলাকা। টিপাইমুখে বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন মারাত্মক হ্রাস পাবে’।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ১৯৯০ সালে ভারত প্রথম টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মনিপুর রাজ্যের জনগণ ও বাংলাদেশের প্রতিবাদের কারণে ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর এই বাঁধ নির্মাণ থেকে পিছু হটে ভারত।
ঊল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা নিয়ে ভারত নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করে। এর মধ্যে ১৯৭২ সালে গঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (জে আর সি)। ১৯৭৪ সালের মুজিবÑইন্দিরা যুক্ত ইশতিহারে বলা হয়েছিল, ফারাক্কা বাঁধ সর্ম্পূণরূপে চালু করার আগে শুষ্ক মৌসুমে প্রাপ্ত পানির পরিমাণ নিয়ে উভয় পক্ষ যাতে সমঝোতায় আসতে পারে সে জন্য ভারত প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ফিডার ক্যানেল’ চালু করবে। তখন ওই শীর্ষ বৈঠকে আরো স্থির হয় যে, শুষ্ক মৌসুমের পানি ভাগাভাগির পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আগে ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হবেনা। সমানভাবে দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করা হবে।’ যুক্ত ইশতিহারের এই সিদ্ধান্ত অনুসারে ভারত ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪১ দিনের জন্য ফারাক্কা বাঁধ চালু করেছিল। ভারত বাংলাদেশের কাছে ওয়াদা করেছিল, ৪১ দিনের নির্ধারিত সময়ে ১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার কিউসেক পানি ফিডার ক্যানেল দিয়ে হুগলী নদীতে নিয়ে যাবে। কিন্তু ৪১ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ভারত পানি প্রত্যাহার অব্যাহত রাখে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে কোন সমঝোতা বা চুক্তি না করেই ১৯৭৬ সালের শুষ্ক মৌসুমে একতরফাভাবে গঙ্গার পানি নিজ দেশের অভ্যন্তরে প্রত্যাহার করে চুক্তি ভঙ্গ করে। ফলে ফারাক্কার পানি বন্টন নিয়ে শুরু থেকেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের মনোমালিন্য চলতেই থাকে। মওলানা ভাসানী লংমার্চের আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির কাছে চিঠি লিখে ও এই বাঁধ বন্ধের আহবান জানিয়েছিলেন। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ইন্দিরা গান্ধির কাছে লিখিত চিঠিতে সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা আর ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবের ফলে সৃষ্ট দুর্ভোগের কথা জানিয়ে বলা হয়, ‘বিশ্বের অন্যতম মহাপুরুষ মহাত্মা গান্ধিকে তোমার দেশের বিশ্বাসঘাতক নথুরাম গডসে হত্যা করিয়া যে মহাপাপ করিয়াছে তাহার চেয়ে ও জঘন্য পাপ তোমার দেশের দস্যুরা করিতেছে।’ তিনি চিঠিতে আরো উল্লেখ করেন, ‘আমার আন্তরিক আশা, তুমি স্বচক্ষে দেখিলেই ইহার আশু প্রতিকার হইবে এবং বাংলাদেশ ও হিন্দুস্থানের মধ্যে ঝগড়া-কলহের নিষ্পত্তি হইয়া পুনরায় বন্ধুত্ব কায়েম হইবে। ফারাক্কা বাঁধের দরুন উত্তরবঙ্গের উর্বর ভূমি কিভাবে শ্মশানে পরিণত হইতেছে তাহাও স্বচক্ষে দেখিতে পাইবে।’ এই চিঠির কোনো উত্তর না পেয়েই মওলানা ভাসানী জীবন সায়াহ্নে এসে লংমার্চের আহবান করেন। পরবর্তিতে যদিও ১৯৭৪ সালের ৪মে ইন্দিরা গান্ধি সে চিঠির উত্তর দিতে গিয়ে ‘ব্যথিত ও বিস্মিত’ হন। ১৬ মে‘কে লংমার্চের দিন হিসেবে বেছে নেয়ার পেছনে কারণ যে বিষয়টি কাজ করেছিল তা হলো, ১৯৭৪ সালের ওই দিনটিতেই স্বাক্ষরিত হয়েছিল মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতিসংঘের শরণাপন্ন হলে ১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি সর্বসম্মত বিবৃতি গৃহীত হয়, যাতে অন্যান্যের মধ্যে ভারতকে সমস্যার একটি ন্যায্য ও দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়া হয়। জাতিসংঘের এই নির্দেশনার পর পানি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও শর্ত রাখছে না ভারত।
নদীমাতৃক বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম-বদ্বীপ অঞ্চল। ৫৮টি আর্ন্তজাতিক নদীসহ কমপক্ষে ২৩০টি নদ-নদী বিধৌত একটি প্লাবন ভূমি। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীগুলোর উৎপত্তি ৩টি মিয়ানমার থেকে এবং ৫৫টির উৎপত্তি ভারত থেকে। ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সম্পাদিত গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে বাংলাদেশের সাথে ৩০ সালা চুক্তি অনুযায়ী ভারত পানি না দেয়ার ফলে এককালের প্রমত্তা পদ্মা ও খরস্রোতা যমুনা এখন পানি শূন্য। এদেশের অনেক নদ-নদী শুকিয়ে গেছে। মরে গেছে অনেক। বিলুপ্তির পথে আরো প্রায় ৫০ নদী । বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধির ফলে দেশের প্রায় এক-চর্তুথাংশ স্থলভাগ পানিতে ডুবে যায়, আবার শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ নদীতে প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার ফলে পানির দুর্র্ভিক্ষ দেখা দেয়। উভয় পরিস্থিতিতেই আমাদের জনজীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। সম্প্রতি বাংলাদেশের হাওর অধ্যুষিত অঞ্চল বলে খ্যাত দেশের ৭টি জেলা যথাক্রমে সিলেটের-৪৩টি, সুনামগঞ্জের-১৩৩টি, হবিগঞ্জের-৩৮টি, মৌলভী বাজারের ৪টি, নেত্রকোণার-৮০টি, কিশোগজ্ঞের-১২২টি ও বি.বাড়ীয়া জেলার-৩টি হাওরের সবকটিই ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে যায়।
ভারত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ব্যবহারের কনভেনশন (১৯৯৭) সহ কোন আইনই তোয়াক্কা করছেনা। বাংলাদেশ থেকে ১৭ কিলোমিটার উজানে ভারত শুধু গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, আন্তর্জাতিক সকল নিয়ম-নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে গত ২৮ এপ্রিল (২০১০)টিপাইমুখ মাল্টিপারপাস বাঁধ তৈরী শুরু করার জন্য বাঁধ তৈরীর সাথে সংশ্লিষ্ট ভারতের হাইড্রো ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার কর্পোরেশন (এনএইচপিসি), সাটলুজ জলবিদ্যুৎ নির্গম লিমিটেড (এসজেভিএন) এবং মণিপুর সরকারের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এনএইচপি লিমিটেডের সিএমডি শ্রী এস.কে গ্রেস, এসডেভিএন লিমিটেডের সিএমডি শ্রী এইচ কে শর্মা, মণিপুর রাজ্য সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারী এল পি গনমি এ স্মারকে স্বাক্ষর করেন। ১৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ প্রকল্পটি মণিপুর রাজ্যের চূড়াচাদঁপুর জেলায় স্থাপিত হবে। ভারত-বাংলাদেশে অভিন্ন ৫৪টি নদীর মধ্যে গঙ্গা ছাড়া বাকি ৫৩টির পানি বণ্টন চুক্তি আদৌ সম্ভব হবে কি না, হলেও কত বছর লেগে যাবে, চুক্তি মতো পানি পাওয়া যাবে কি নাÑ এসব প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারছে না। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সামান্যতম লাভবান না হলেও এবাঁধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ।
ফারাক্কা বাঁধ চালুর পর ১৯৭৬ সালে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক লংমার্চ করে বিশ্ব বিবেকের নজর কেড়েছিল। উল্লেখ্য যে, ২০০৫ সালের ৯ মার্চ আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহবায়ক,জমিয়তে ঊলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের নেতৃত্বে টিপাইমুখ বাঁধ অভিমুখী ঐতিহাসিক লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর মুক্তাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে ১০ মার্চ ২০০৫ইং সিলেটের জকিগঞ্জে ঐতিহাসিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লাখো জনতার উপস্থিতিতে স্মরণ কালের এ বৃহৎ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আশরাফ আলী বিশ্বনাথী (র.)। এদিকে ১৯৯৫ সালের ৫ এপ্রিল সিলেট জেলা জমিয়তের উদ্যোগে সর্বপ্রথম বারঠাকুরিতে বরাক বাঁধের বিরুদ্ধে বিশাল সমাবেশ অনষ্ঠিত হয়। বরাক নদীতে এই বিশাল বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ এবং পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায় আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ বরাক নদী বাংলাদেশে যেখানে বিভক্ত হয়েছে সুরমা ও কুশিয়ারা হিসেবে, সেখান থেকে একশ কি .মি. উজানে নির্মাণাধীন এই বাঁধটি অবস্থিত। টিপাইমুখ বাঁধটি যে এলাকায় নির্মিত হচ্ছে সেটি মারাত্মক ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। এ বাঁধের বিরুদ্ধে যে শুধু বাংলাদেশের জনগণই প্রতিবাদি হয়ে উঠেছে তা, নয়। বরং এ বাঁধের বিরুদ্ধে ভারতের জনগণও সোচ্চার। ২০০৭ সালের ১৪মার্চ মণিপুরের জনগণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বরাবরে স্মারকলিতে উল্লেখ করেন যে, আমরা এই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারীগণ আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ১৯৮০ সালের শেষ দিক থেকে বছরের পর বছর টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে এ ধরনের বহু স্মারক লিপি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করা হয়েছে। মণিপুরবাসী স্মারকলিপিতে আরো বলেন-টিপাইমুখ বাঁধ বাতিল করুন, বরাক নদীকে মুক্তপ্রবাহিত হতে দিন।’
গবেষকদের মতে, দেশের উত্তর-র্পূবাঞ্চলীয় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উপর এর অত্যন্ত মন্দ প্রভাব পড়বে এবং বাংলাদেশের এক বিশাল অঞ্চলের জীবন-জীবিকা, প্রতিবেশ-পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের মতে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলে বাংলাদেশের কমপক্ষে ৭ টি জেলা- সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্চ, বি বাড়ীয়া, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণায় ফসল সহ কৃষি ও পশু সম্পদ উৎপাদন ব্যাহত হবে। ভারতের নদী আগ্রাসনের মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের সীমাহীন শৈথিল্য ও অনিহার প্রেক্ষিতে দেশের সামগ্রিক স্বার্থ রক্ষায় দেশপ্রেমিক জনগণকেই র্কাযকর ভূমিকা পালন করতে হবে। আর সে আগ্রাসী অপতৎপরতা রোধে চাই সম্মিলিত প্রতিরোধ, গড়ে তোলতে হবে জাতীয় ঐক্য।
লেখক : সিনিয়র সহসভাপতি-অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন সিলেট।