সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত মিছিল সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। পুলিশ বাধা উপেক্ষা করে নেতা কর্মীরা দিরাই রাস্তা মোড়ে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। যেখানে বাধা সেখানেই সমাবেশ করে বিএনপি।
সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলে করে দিরাই রাস্তা পয়েন্টে আসতে চাইলে দিরাই-মদনপুর রাস্তার নোয়াখালী বাজারে দিরাই বিএনপির ২ শতাধিক মোটরসাইকেল র্যালীটি পুলিশ আটকিয়ে দেয়। একই সাথে ছাতক-দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর থেকে নেতাকর্মীরে কয়েক শতাধিক মোটরসাইকেল র্যালীটি পুলিশ আহসানমারা সেতুতে আটকিয়ে দেয়। জামালগঞ্জ-তাহিরপুর থেকে আহত মোটর সাইকেল র্যালিটি পুলিশ জয়নগর আটকিয়ে দেয়। পরে নেতা কর্মীরা পায়ে হেঁটে দিরাই রাস্তা অভিমুখে যাত্রা করে। সুনামগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে যেতে বাধা দেওয়ায় সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ২০টি লেগুনা ভাঙচুর করেছে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার (২১ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মদনপুরে ২০ দলের সমাবেশ হওয়ার ছিল। কিন্তু সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মদনপুরে অবস্থান নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের নীলপুর বাজারে বেড়িকেড দিয়ে রাখে।
এ খবর পেয়ে অন্য নেতাকর্মীরা শহরের বক পয়েন্ট, বিহারী পয়েন্ট ও কাজীর পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি মিছিল বের। মিছিল থেকে তারা অতর্কিতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ২০টি লেগুনা ভাঙচুর করে।
ডদরাই রাস্তা মোড়ে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাছির চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরিন, দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, ছাতক উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জেপি, আব্দুল্লাহ আল-নোমান, সুনামগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল হক, দিরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক রশিদ আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহেদ, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ শফিক, ইকবাল হোসেন, ময়না মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আমাদেও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ দিয়ে বাধা দিয়ে সরকার প্রমাণ করছে এদেশে বাকশাল শাসন চলছে। রক্ষীবাহিনী দিয়ে সভাসমাবেশে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। তারা নেতা কর্মীদের বলেন, নিরাশ হবেন না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই নেতাকর্মীরা লেগুন ভাঙচুর করে। বর্তমানে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এদিকে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ষোলঘর আবাসিক এলাকায় আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট আফতাব উদ্দিন আহমদের বাসার সামনে একটি যাত্রীবাহি লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করেছে মুখোশধারী অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার এশার নামাজের পরপরই জেলা সদর থেকে আমবাড়ি বাজারে যাওয়ার পথে যাত্রীবাহি চলন্ত ১টি লেগুনা গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের মধ্যে আতংক শুরু করে আগুন ধরিয়ে দেয় ঐ দুর্বৃত্তরা। এতে যাত্রীরা ভয় পেয়ে প্রান নিয়ে কোন রকমে পালিয়ে যান। ঘটনার সময় এডভোকেট আফতাব উদ্দিন শহরের রমিজ বিপণীস্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যস্ত ছিলেন। খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ইতিমধ্যে র্যাব-৯ এর সুনামগঞ্জ পিভিসি-৩ ও সুনামগঞ্জ সদর থানার টহলদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার ব্যাপারে এডভোকেট আফতাব উদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী সমর্থক ছাড়াও জনমনে আতংক ছড়ানোর লক্ষ্যে জামাত-বিএনপির লোকেরা এ পরিকরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা সংগঠিত করেছে। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নাশকতাকারীদের চিিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।