কাজিরবাজার ডেস্ক :
নাশকতা, মানুষ হত্যা, বোমা-গ্রেনেড হামলা, অগ্নিসংযোগ, জানমালের ক্ষতি করা বন্ধ করতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়াটা ছিল রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত। তাদের এই রাজনৈতিক ভুলের খেসারত জনগণকে কেন দিতে হবে?
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারী, রাজাকার-আলবদরদের বিচারের কাজ এগিয়ে চলছে। রায় কার্যকর করা হচ্ছে।’ ‘এই বিচার বানচাল করতে, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে অন্ধকারের অপশক্তি যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, জনগণের মঙ্গল চায় না।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, নাশকতার পথ পরিহার করে শান্তির পথে আসুন। দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কী কী করতে চান তা মানুষকে জানান। নিজের দলকে গড়ে তুলুন। তাহলেই হয়তো ভবিষ্যতে সম্ভাবনা থাকবে। যে পথে আপনি চলছেন তা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে পাঁচ বছর দেশ পরিচালনা করেছি। এমন এক অবস্থায় আমরা সরকার গঠন করেছিলাম যখন সমগ্র বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং চরম খাদ্যাভাব চলছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ বিএনপি-জামাতের দুঃশাসন. দুর্নীতি, জঙ্গিবাদী কার্যক্রম এবং দুই বছরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দমননীতির ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম বিপর্যস্ত ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ছিল।
এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করে সমাজের সবস্তরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনে। মানুষের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস সঞ্চার কবে। নব উদ্যমে দেশ গড়ার কাজে মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সার্বিক উন্নয়নের লক্ষে ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ণ করে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নও চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ দেশের মানুষ ভাল আছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত বছর ছিল বাংলাদেশের জন্য সাফল্যের বছর। আমাদের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে গত মেয়াদের পাঁচ বছর এবং এই মেয়াদের প্রথম বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া পাঁচটি দেশের একটি- বাংলাদেশ। আমরা ৬.২ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর।
তিনি বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। চলতি ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে বাজেটের আকার ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকায় বৃদ্ধি করেছি।
বিএনপি-জামাত জোট আমলের শেষ বছরে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার যা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৯০ মার্কিন ডলারে।
৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্য আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। বিএনপি-জামাতের শেষ বছরে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ। তার সরকার তা কমিয়ে ২৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশে দারিদ্র্যের হার কমে ১১ শতাংশে নেমে এসেছে বলেও জানান তিনি।