প্র্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, সুশীল সমাজসহ অনেকেই বলেন আমরা দল নিরপেক্ষ। কিন্তু আদর্শ নিরপেক্ষ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কতগুলো জাতীয় প্রশ্ন আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সার্বভৌমত্ব, জাতির জনকের মর্যাদা এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যারা নষ্ট করে, দেশের উন্নয়নকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে, সেখানে আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার কোন সুযোগ নেই। গণতন্ত্রে বহুমত ও বহুদল থাকবে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে যারা বাধা সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কলম ধরবো।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিলেটভিউ২৪ডটকম’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিকাল ৪টা থেকে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় ইকবাল সোবহান চৌধুরী আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ শিখরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃতজ্ঞ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। তার হাত ধরেই অর্জিত হয়েছে এই সোনার বাংলাদেশ। যদি আমরা এই দেশ না পেতাম।
ইকবাল সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। তিনিই প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, দেশে আজ অবাধ তথ্য প্রযুক্তির হাওয়া বইছে। সরকারি টেলিভিশনের পাশাপাশি দেশে প্রায় ৪০টির মতো বেসরকারি টেলিভিশন তাদের সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যাও বাড়ছে উত্তরোত্তর।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা আছেন তারা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, জনগণের কাজে তাদেরকে নিয়মিত জবাবদিহিতা করতে হয়। গণমাধ্যম অবাধে তথ্য প্রচার করে এই জবাবদিহিতাকে আরো বেগবান করছে। আমাদের সংবিধানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা স্বীকৃত। গণমাধ্যম এই স্বাধীনতা ভোগও করছে। তবে আমাদের গণমাধ্যমকেও সংবাদ প্রচারে দায়িত্ববান হতে হবে। দেশের সংবিধান, উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে আপোস করে কোনো সংবাদ প্রচার নয়- এ রকম দায়িত্বশীল আমাদের গণমাধ্যমকে হতে হবে।
নিজেকে পেশাজীবী সাংবাদিক উল্লেখ করে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আমরা সাংবাদিকরা কারো কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নই। তবে নীতির বিবেকের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী আরো বলেন, আগামী ২০২০ সাল জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হবে। ২০২১ সালে দেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে। ওই দুই বছর বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক, গৌরবের বছর।
তিনি বলেন, দেশে আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। তারপরও আমাদের ক্ষোভ ও নিন্দা তাদের প্রতি- যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। মা বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার হচ্ছে, যে রায় দেয়া হচ্ছে সে রায়ের বিরোধিতা করে উন্নয়ন ব্যাহত করতে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধেও আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে হবে উন্নয়নের জন্য, মানুষের জন্য, সমৃদ্ধির জন্য। এমন কর্মসূচী চাই যা স্বাধীনতার গণতন্ত্রেও ও উন্নয়নের পথ আরো বেগবান করতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন সিলেটভিউ২৪ডটকম’র সম্পাদক শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী (নবেল)। সিলেটভিউ’র নির্বাহী সম্পাদক দেবাশীষ দেবুর সঞ্চালনায় ও বাণিজ্যিক সম্পাদক পিংকু ধরের স্বাগত বক্তব্যে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের পলিটব্যুরো সদস্য ধীরেন সিংহ, সিলেটভিউ২৪ডটকম’র আইন উপদেষ্টা এডভোকেট মইনুল ইসলাম ও এডভোকেট শামছুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সিলেট ব্যুরো চীফ সাংবাদিক আল আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম সিংহ, টেলিভিশন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকরামুল কবির ইকু, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক এমএ মজিদ, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেটের সভাপতি ব্যারিষ্টার আরশ আলী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা ফুটবল সংস্থার সভাপতি মাহী উদ্দিন সেলিম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম সেলিম প্রমুখ।
এর আগে সিলেট সারদা হল থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন অতিথিরা। বিজ্ঞপ্তি