চালককে অজ্ঞান করে মাইক্রোবাস ছিনিয়ে নেয়ার মামলার রায় ॥ ৭ ছিনতাইকারীর ৫ বছরের কারাদন্ড

34

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীতে চালককে অজ্ঞান করে মাইক্রোবাস ছিনিয়ে নেয়ার মামলায় ৭ ছিনতাইকারীকে ৫ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক মোঃ সায়েদুল করিম এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- পটুয়াখালি সদর থানার কেলিখেলি মাঝবাড়ির শাহ আলমের পুত্র মনির ওরফেসুমন ওরফে স্বপন (২৮), কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার শ্রমুদি গ্রামের মোঃ নুর ইসলামের পুত্র বর্তমানে ঢাকা সাভার যাদুরচরের বাসিন্দা মোঃ আলা উদ্দিন আলাল ওরফে আলাল (৩৫), বিশ্বনাথ থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ইসকান্দার আলীর পুত্র মোঃ আবুল হোসেন ওরফে আলী হোসেন (২৬), বরগুনা জেলার তালতলি থানার অঙ্কুকানপাড়ার মৃত অমুল্য চন্দ্র হাওলাদারের পুত্র পরিমল চন্দ্র হাওলাদার ওরফে সাগর (২৯), একই জেলার সদর থানার গর্জনবুনিয়া গ্রামের গফুর হাওলাদারের পুত্র মোঃ আনিস (২৫), নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার টেট্রা গ্রামের কালাম হোসেনের পুত্র মোঃ ইসলাম ওরফে ইসলাম (২৬) ও চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার আলগী গ্রামের মোঃ মোস্তফা পাটোয়ারীর পুত্র মোঃ  জসিম উদ্দিন ওরফে জসিম (২৩)।
রায়ের সাথে প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানা দিতে না পারলে প্রত্যেক দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা বিনাশ্রমে আরো ৬ মাস করে কারাভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী জসিম, মোঃ ইসলাম ও আলা উদ্দিন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অপর সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা পলাতক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নগরীর দাড়িয়াপাড়ার মুখের রেঁস্তোরা সংলগ্ন মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে বেড়ানো কথা বলে ভাড়ায় (ঢাকামেট্রো-চ-১১-৩৯৫৫) নং মাইক্রোবাস গাড়ী চালক মোঃ মোস্তফাকে নিয়ে উল্লেখিত আসামীরা জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ান হয়। ওইদিন দুর্বৃত্তরা সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে চালক মোস্তাককে অজ্ঞান করে শায়েস্তাগঞ্জ রেলক্রসিংয়ের রাস্তার পাশে ফেলে তার গাড়ীটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনারদিন রাত ১১ টার দিকে সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ থানার কামাউড়া নামক স্থানে হাইওয়ে পুলিশ গাড়ীটি উদ্ধারসহ ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করলেও অপর ছিনতাইকারীরা তখন পালিয়ে যায়। এদিকে, অচেতন অবস্থায় গাড়ী চালক মোস্তাককে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় মাইক্রোবাস গাড়ীর মালিক কুমারপাড়া আবাসিক এলাকার ঝরনারপারের বাসিন্দা মোঃ নুর আলম বাদি হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। নং-২৪ (২১-১১-২০১১)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে কোতোয়ালী থানার এসআই আশরাফু উজ্জামান একই বছরের ২৯ নভেম্বর ৭ ছিনতাইকারীকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর থেকে এ মামলার বিচার কার্য্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানী ও ৯ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী জসিম, মোঃ ইসলাম ও আলা উদ্দিন, মনির, আবুল হোসেন, পরিমল চন্দ্র ও মোঃ আনিসকে  আইন শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ দ্রুত বিচার আইন ২০০২ সংশোধনী ২০১০ এর ৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে উল্লেখিত দন্ডদেশ প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট রাশেদা খানম এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট শহিদুজ্জামান চৌধুরী ও মোঃ সফিকুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।