স্টাফ রিপোর্টার
জকিগঞ্জের বারঠাকুরীর সোনাসার এলাকার বাসিন্দা ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা ফয়সল আহমদ তাফাদারের বিরুদ্ধে বিয়ের নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ করেছেন নগরীর মাছিমপুরের বাসিন্দা সাকিব হাসান। রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাকিব হাসান বলেন, স্ত্রী ও তিন সন্তান থাকা সত্তে¡ও পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের জিন্দাবাজার কার্যালয়ের এই কর্মকর্তার লালসার শিকার হতে হয়েছে তার বোন তামান্না আক্তারকে। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তার বোনকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সম্ভ্রমহানী করেন। এক পর্যায়ে বিয়ে করলেও ভুয়া কাবিননামা সম্পাদন করেন। অবশ্য গত ১৩ ফেব্রæয়ারি অপারেশন ডেভিল হান্টে ফয়সল আহমদ তাফাদার কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সাকিব বলেন, ২০২১ সালে তার ছোটবোন তামান্না আক্তার সীমান্তিক ইন্সটিটিউটে শিক্ষার্থী থাকাকালে ফয়সল আহমদের কুদৃষ্টিতে পড়ে। পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের ফিল্ডকর্মী তাদের এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে তার বোনের মোবাইল নম্বর পেয়ে উত্যক্ত করতে থাকে। এ ব্য়াপারে তারা প্রতিবাদ করলে ফয়সল আহমদ নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দিয়ে তার কাছে বিয়ে না দিলে হত্যার হুমকী দেয়।
তিনি অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে ফয়সল আহমদ তার বোনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ও চলাচলের রাস্তায় ভাড়াটিয়া মাস্তান দিয়ে বিরক্ত করতে থাকে। কখনও ফয়সল তাফাদার নিজেই এসে তার বোনকে উত্যক্ত করতো। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে তার ছোট বোনকে নানা বাড়ি সুনামগঞ্জে রেখে আসেন। সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ট্রেনিং কোর্স চলতে থাকা অবস্থায় ২০২৩ সালের ২২ জুলাই ফয়সল তাফাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সুনামগঞ্জ থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখে গামছা বেঁধে অপহরণ করে সিলেট নিয়ে আসে। জোরপূর্বক সম্ভ্রমহানী ঘটায় এবং মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। এক পর্যায়ে ৫লাখ টাকা দেমোহর দিয়ে নিকাহনামা সম্পাদন করলেও তা ছিল ভুয়া।
পরবর্তী জাতিসংঘের একটি প্রকল্পে নোয়াখালীতে তার বোনের চাকুরী হয়। তার বোন চাকুরীতে যোগদানের পর ফয়সল তাফাদার তার বোনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। তখন, তার বোন নিকাহনামার কথা বললেই ফয়সল আহমদ অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলে। ফেইক নিকাহনামার বিষয়ে তার বোন জানতে চাইলে ফয়সল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তার বোনকে মারধর করে। তার বোনের সাথে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগে রক্ষিত সার্টিফিকেট, চাকুরীর নিয়োগপত্র, মেডিকেল সার্টিফিকেট, চাকুরীর আইডি কার্ডসহ তার বোনের নামীয় পূবালী ব্যাংক লিমিটেড উখিয়া ব্রাঞ্চ কক্সবাজার এর হিসাব নং- ১০১৬১০১২১৯৫৬০, চেক নং- ২৯১২৫২৬ হতে ২৯১২৫৫০ মোট ২৫ টি চেকে তার বোনের স্বাক্ষরিত চেকবই জোরপূর্বক নিয়ে নেয়।
পরে, ফয়সল আহমদ তাফাদার তার বোনের সাথে কোন যোগাযোগ রক্ষা না করা, অপহরণ করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ে করা, ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা, মোবাইলে অশ্লীল ছবিধারণসহ জোরপূর্বক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়ায় তার বোন স্থানীয় ভাবে বিচার প্রার্থী হয়। এক পর্যায়ে বাধ্য় হয়ে তার বোন আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলা নং- কোতোয়ালি সিআর-১১৩/২০২৫। মামলা দায়েরের পূর্ব পর্যন্ত তার বোনের ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা উত্তোলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি েেআরা জানান, মামলা দায়েরের পর ফয়সল আহমদ তরফদার ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদর হুমকি দিচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে তিনি গত ১২ ফেব্রæয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।