রাজনগরে ৪ মাসে ১৩টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি

3

 

রাজনগর সংবাদদাতা

মৌলভীবাজারের রাজনগরে আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত চারমাসে ১৩টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেও চুরি ঠেকাতে পারছে না। এতে বারবার টাকা দিয়ে ট্রান্সফরমার কিনতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। ট্রান্সফরমার চোররা ধরা পড়লেও পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আবারো জড়িয়ে পরে চুরির কাজে।
রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে রাজনগর পল্লী বিদ্যুতের ৬টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে আরো ৬টি ও নভেম্বর মাসে ১টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসব ঘটনায় পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ মামলা করেই নিজেদের দায় সারছেন। চুরি করতে গিয়ে গত ১৭ নভেম্বর গভীর রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ক্ষেমসহ¯্র এলাকায় জনতা ধাওয়া দিয়ে শাহিন মিয়া (৩৫) নামের এক চোরকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় রাজনগর পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মো. আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে ট্রান্সফরমার চুরির চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। একই রাতে উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের সালন গ্রাম থেকে একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, গত বছর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের একটি গ্রামে ট্রান্সফরমার চুরির সময় ৫ জনকে আটক করে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী। সেই সময় শাহিন মিয়াও ওই ৫ জনের সাথে ধরা পড়েন। কিন্তু কিছুদিন আগে জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি আবারো চুরিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রতিটি ৫ কেভির ট্রান্সফরমারের দাম ৪২ হাজার টাকা, ১০ কেভির দাম ৬৩ হাজার টাকা, ১৫ কেভির দাম ৭৩ হাজার টাকা ও ২৫ কেভির দাম ১ লাখ ১১ হাজার টাকা। পল্লী বিদ্যুতের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমবার চুরি হওয়া ট্রান্সফরমার পুনঃস্থাপনে গ্রাহককে অর্ধেক মূল্য দিতে হয়। এরপর যতবার চুরি হবে ততবারই পুরো মূল্য দিয়ে ট্রান্সফরমার নিতে হয় গ্রাহকদের। ফলে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিতে পড়েন গ্রাহকরা।
ক্ষেমসহ¯্র গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল মুকিত বলেন, গত ১৭ নভেম্বর রাতে ঘরের বিদ্যুৎ চলে গেলে বাইরে বেরিয়ে দেখি একজন বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলে আছে। সামনে এগিয়ে গেলে টের পেয়ে কয়েকজন পালিয়ে যায়। পরে খুঁটিতে থাকা চোরকে ধরতে গেলে আমাকে আঘাত করে পালিয়ে যেতে চায়। চিৎকার শুনে এলাকাবাসী বেরিয়ে এসে ধাওয়া দিয়ে ধরে তাকে পুলিশে দেই। পরদিন ট্রান্সফরমারটি পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পল্লী বিদ্যুতের রাজনগর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. গোলাম সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে চুরির ঘটনায় মামলা করা হয়। এসব চুরি ঠেকাতে সাধারণ গ্রাহকদেরও সচেতন হতে হবে। যারা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হলে চুরি রোধ পাবে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মুবাশ্বির বলেন, চোরদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। চুরি-ডাকাতিসহ যেকোনো ধরণের অপরাধ রুখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সম্প্রতি এক ট্রান্সফরমার চোরকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে।